ঢাকা: শরীর সুস্থ রাখতে প্রতিদিন স্বাস্থ্যকর খাবারের বিকল্প নেই। ফল, সবজি ও শস্যকণাসহ বিভিন্ন খাবার আমাদের শরীরের পুষ্টির চাহিদা মেটায়।
মগজ কাজে লাগাও, নয়তো হারাও
ঠিক পেশির মতোই কাজ করে মগজও। তাই এটির ব্যবহার যত বেশি করবেন, ততই শক্তিশালী হবে। নতুন কিছু শিখলে, দৈনন্দিন কার্য তালিকায় বৈচিত্র্য আনলে, তপ্ত বিতর্কে লিপ্ত হলে, কোথাও বেড়াতে গেলে কিংবা কোনো বাদ্যযন্ত্র বাজালে মগজ নতুন কিছুর সঙ্গে পরিচিত হয়। নতুন নতুন বিষয়ের সঙ্গে মগজের সম্প্রীতি তৈরি করুন। দেখবেন, এতে মাথা ভালোভাবে কাজ করে। অন্তত, মাথায় গোবর আছে, বা ওর মাথায় ঘিলু নেই, এ তকমা শুনতে হবে না।
খেতে হবে শ্বেতসার খাবার
কানাডীয় এক সমীক্ষায় দেখা যায়, যে সব বয়সী লোকদের খাদ্যতালিকার বড় অংশ শ্বেতসারজাতীয় খাবার আছে, তাদের স্মৃতিশক্তি খুব ভালো কাজ করে। কাজেই ফল, সবজি ও অন্যান্য যে খাদ্যশস্য খাচ্ছেন, তাতে আপনি শ্বেতসার খাবার পাচ্ছেন; সেটি নিশ্চিত হোন। কারণ এটা আপনার মগজে ক্রমাগত গ্লুকোজ ছড়িয়ে দেয়। শর্করাজাতীয় কেক বা আইসক্রিমও আপনার শ্বেতসারের চাহিদা মেটাতে পারে। ধপ করে মনোযোগ বিক্ষিপ্ত হলে কিংবা হঠাৎ কোনোকিছু বেমালুম ভুলে গেছেন- এমনটা ঘটলে এসব খাবার আপনাকে বেশি উপকৃত করবে। সপ্তাহখানেক তেলসমৃদ্ধ খাবার খেয়ে দেখতে পারেন, আপনার মাথার ঘিলুর জন্যে বেশ সহায়ক হবে। তবে যথাসম্ভব মগজকে কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে। যত ব্যস্ত রাখবেন, তত শক্তিশালী হবে।
কৌশলের উন্নতি
ক্রমাগত একঘেঁয়ে কাজ করলে সবকিছু ঝাপসা হয়ে যায়। দেখবেন অনেক কিছুতে বেখেয়াল হয়ে পড়বেন। গবেষণায় জানা যায়, লাগাতার কাজ আপনার স্মৃতিশক্তি ও মনোযোগ নষ্ট করে দিতে পারে। এজন্য কাজ শুরুর পর খানিক বিরতি দিন। কাউকে ডাকতে হলে, তার নাম ধরে জোরে ডাকুন, এটা স্মৃতিশক্তির জন্যে ভালো। একেবারে শান্ত ও নীরব পরিবেশে পড়াশোনা কিংবা কাজ চালিয়ে যান। কোলাহলে আপনার মনের মধ্যে কোনো একটি ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটানোর প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত করতে পারে। স্মৃতিশক্তি বাড়িয়ে তুলতে এই চর্চাগুলো আপনি করতে পারেন।
বিষাদ ও দুশ্চিন্তা দূর
সত্যিই, মাথার ভেতর থেকে এই দু’টি জিনিস একেবারে ঝেড়ে ফেলুন। বিষাদ ও দুশ্চিন্তা আপনার স্মৃতিশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত করবে। মানসিক চাপ, বিষণ্নতা, মনমরা ও ক্রমাগত হতাশা থাকলে স্মৃতিশক্তির জন্যে খুব বেশি মাশুল গুনতে হতে পারে। এতে আপনার মনোযোগ নষ্ট হবে, সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা তৈরি করবে, সহজে কোনোকিছু মনে রাখতে পারবেন না। মানসিকভাবে হয়ে পড়বেন স্থিতধী। আপনার সচেতন ও সজাগ থাকার ক্ষমতাও নষ্ট হয়ে যাবে।
হাসুন
শৈশবের পড়া দাদা ভাইর সেই ছড়ার মতো, ‘হাসতে নাকি জানে না, কে বলেছে ভাই? এই শোন না কত হাসির খবর বলে যাই’। হাসির এত খবরের মধ্যে আপনিও কি না হেসে পারবেন? আপনাকেও হাসতে হবে। যতক্ষণ না আপনার পিলে চমকে যায়। স্মৃতিশক্তি সতেজ রাখতে হাসির বিকল্প নেই। আবেগের সাড়া (emotional response) মগজের নির্দিষ্ট কিছু জায়গায় প্রভাব বিস্তার করে। কিন্তু হাসি পুরো মগজ সতেজ রাখতে ভূমিকা রাখে। এজন্য কৌতুক, দুষ্টমি বা অন্য কোন সুযোগে চাঁদের মতো হাসবেন, তাতে আপনার ফোকলা দাঁত থাকুক বা নাই থাকুক। মাথার ঘিলু বাড়াতে হাসির চেয়ে বড় ওষুধ নেই।
নাম মনে রাখুন
কারও সাথে পরিচিত হলে ব্যক্তির নাম ভালোভাবে শুনুন, এরপর তার নামের বানানটা খেয়াল করুন। যেমন কারও নাম অংমু পাল, তাকে জিজ্ঞেস করুন, অংমু কি এখানে অ এ অনুস্বর এরপর মু। নাম শোনার পর সেটা নিয়ে একটা সুন্দর মন্তব্য করুন। যেমন, বাহ, বেশ সুন্দর নাম তো। ওহ এটা ত আমার ভাইয়ের ছেলেরও নাম। কথা বলার ফাঁকে বার কয়েক তার নামটা ব্যবহার করুন। দেখবেন নামটা ভুলতে আপনার বেশ কষ্টই হবে।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫