ঢাকা: পৃথিবীতে সবার চলার পথ এক নয়। এই পথে অনেককেই পাড়ি দিতে হয় অনেক ঝড়-ঝাপটা।
যুক্তরাষ্ট্রের বহু বিবাহ সমর্থন সম্প্রদায়ভুক্ত এই নারী নিজে কখনও আবদ্ধ হতে পারেননি বিয়ের বন্ধনে। কারণ কঠিন এক বাস্তব।
মেলিন্ডা সেক্রাল এজেনেসিস নিয়ে জন্ম নিয়েছেন। অর্থাৎ তার মেরুদণ্ড পাঁজড় পর্যন্ত এসেই থেমে গেছে। ফলে শরীরের নিচের অংশ আর বেড়ে উঠতে পারেনি। ডাক্তার ভেবেছিলেন যে মেলিন্ডা বুঝি বসতে বা কথা বলতেও পারবেন না। তবে ৪০ বছর বয়সী মেলিন্ডা পুরোদমে চার চাকার মোটরসাইকেল চালাচ্ছেন, নৌকা বাইছেন। আর তার শখ? সার্ফিং আর শুটিং।
যুক্তরাষ্ট্রের য়্যুটার সরকারি প্রশাসনিক কর্মকর্তা মেলিন্ডা গত বিশ বছরে কোনো অভিসারে যাননি। তবে সম্প্রতি তিনি ভালোবাসার খোঁজ করছেন বলে জানা যায়। মেলিন্ডা হাতের ওপর ভর করে চলাফেরা করেন। আর হুইল চেয়ার তার নিত্যসঙ্গী। নিজের অবয়ব নিয়ে বললেন, আমার শরীরের উপরের অংশ অন্যান্য স্বাভাবিক মানুষের মতই। তবে নিচের অংশের গঠন থেমে গেছে।
তাই বলে মেলিন্ডার জীবন থেমে নেই। তিনি এক কথায় সবই করছেন। মেলিন্ডা জানান, আমার অথর্বতা আমার জীবনের স্বাদ নিতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি। আমি কর্মক্ষম থাকতে ভালোবাসি। আমার অনেক ভালো বন্ধুও আছে। তবে আমার জীবনের একটি অপূর্ণতা রয়েছে তা হলো- আমার কোনো বয়ফ্রেন্ড নেই। প্রেমে পড়তে চাই আমি।
মেলিন্ডা নিজের জীবনসঙ্গী না পাওয়ার যুক্তি হিসেবে বলেন, আমি জানি সবাই আমার অক্ষমতাকেই বিচার করে। তারা ভাবে যে আমাকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করলে বুঝি সবসময়ই আমার দেখাশোনায় ব্যস্ত থাকতে হবে তাকে। তবে তারা জানে না যে আমি কতটা স্বাধীন।
যদিও মেলিন্ডা সন্তান জন্মদানে সক্ষম, তবুও তিনি পরিবার গঠন ও সন্তানের ব্যাপার নিয়ে চিন্তিত। কারণ তার জীবনঘড়ি কতক্ষণ তাকে সময় দেবে তা নিয়ে তিনি নিশ্চিত নন।
মেলিন্ডা বলেন, আমি গির্জায় যেতে ভালোবাসি। গির্জা আমার কাছে খুব গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমার জীবনের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ একটি অংশ। কারণ যতক্ষণ আমি গির্জায় থাকি ততক্ষণ ভুলে থাকি যে আমি বিবাহিত নই।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে মেলিন্ডা বলেন, আমার জন্য বুঝি পৃথিবীতে কোনো পুরুষ নেই।
মেলিন্ডা বেড়ে উঠেছেন নিজ পরিবারেই। তার মা ক্যারল, বাবা প্যাট ও বড় ভাই মন্টির সাথে। তিনি তার ছেলেবেলার স্মৃতি নিয়ে বেশ উচ্ছ্বসিত। ছেলেবেলায় মেলিন্ডা আর তার ভাই একই সঙ্গে খেলতেন। তাদের দলের সবাই যা করতো মেলিন্ডাও তাই করতে পারতেন। তার জন্য কোনো আলাদা নিয়ম ছিল না। এরপর বড় হওয়ার সাথে সাথে মেলিন্ডা শিখলেন গাড়ি চালানো ও স্বাধীনভাবে বাঁচতে। তবে তার জীবনে একটি শূন্যস্থান। প্রাণের মানুষের দেখা মেলেনি আজও।
বাবা-মায়ের মৃত্যুর পর থেকে জীবনযুদ্ধ শুরু হয় মেরিন্ডার। মেলিন্ডা শিখলেন কি করে একা বাঁচতে হয়।
এ ব্যাপারে মেলিন্ডা নিজেই পদক্ষেপ নিয়েছেন। তিনি অনলাইন ডেটিং ওয়েবসাইটগুলোতে নিজের ছবি আপলোড করতে শুরু করলেন। তবে মিস্টার রাইট কবে ধরা দেয় তা এখনো অপেক্ষার বিষয়।
মেলিন্ডা বলেন, আমি মনে করি বিপরীত লিঙ্গের কাছে আমি আকর্ষণীয়। অনেকেই বলেছেন, আমি সুন্দরী। তবে একথাটির মানে এই না যে তারা আমার সঙ্গে ডেটিং করতে আগ্রহী।
হতাশাগ্রস্ত মেলিন্ডার ওয়েবসাইটে এই প্রোফাইল এখনো হিট করেনি। তবে রিলেশন ম্যাচ মেকাররা মেলিন্ডাকে তার মেকওভার পাল্টানোর বিভিন্ন টিপস দিয়েছেন। এতে করে মেলিন্ডার আত্মবিশ্বাস বাড়বে বলে তাদের ধারণা।
এ প্রসঙ্গে মেলিন্ডার উক্তি- দেরি হলেও আমি উপযুক্ত সঙ্গীই পাবো বলে আমার ধারণা।
আমার বিশ্বাস একদিন না একদিন কেউ সত্যিই আমার কাছে ধরা দেবে। কারণ আমি রোমান্টিক। আর সেদিন আমি আমার সবটুকু তাকে বিলিয়ে দেবো।
বাংলাদেশ সময়: ০১৩১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৫