ঢাকা: ভাষাশহীদ আবুল বরকত স্মৃতি জাদুঘর ও সংগ্রহশালায় পা রাখতেই ঘিরে ধরে বরকতের অনেক স্মৃতি। মনে হয় আজও জাগ্রত আমাদের এই শ্রেষ্ঠ সন্তান।
পলাশীর মোড়ে বুয়েট ও সলিমুল্লাহ হল সংলগ্ন এই জাদুঘরটিতে গেলে আপনিও যেন খুঁজে পাবেন এই ভাষা শহীদের উপস্থিতি। এখানে সংরক্ষণ রয়েছে আবুল বরকতের বেশ কিছু ব্যবহার্য জিনিস। আবুল বরকত যে কাপে চা খেতেন, তেমন তিনটি কাপ-পিরিচ রয়েছে এখানে। সেই সঙ্গে খুঁজে পাওয়া যায় তার ছোটবেলার একটি খেলনাও।
জাদুঘরটিতে সবচেয়ে বেশি নজর কাড়বে বরকতের লেখা দুটো চিঠি। চিঠিটি দেখে বোঝা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার আগে তিনি তার বাবাকে লিখেছেন। তারিখটি ছিল সেপ্টেম্বরের ২ তারিখ।
চিঠিতে তিনি লিখেছেন, ‘পাকজনাবেষু বাবাজান, আমার সালাম গ্রহণ করিবেন। আশা করি খোদার ফজলে ভালো আছেন। অনেক দিন হইতে আপনাদের কোনো সংবাদ না পাইয়া বড় চিন্তিত আছি। আমি আপনাকে একখানা চিঠি দিয়েছে, বোধ হয় পেয়েছেন। ইউনির্ভাসিটিতে এখনো ভর্তি হওয়া হয় নাই, তবে ২/৪ দিনের মধ্যে ভর্তি হব। ’
জাদুঘরে এসে যদি আপনি মনোযোগ দিয়ে চিঠিটি পড়েন। তাহলে দেখতে পাবেন আমারা যারা এই ভাষা শহীদকে বরকত নামে ডাকি তা বরকত নয়, হবে বরকাত। কারণ তিনি চিঠিতে বরকাত বানান করে লিখেছেন। এছাড়া অন্য চিঠিগুলো দেখতে পাবেন যেগুলো লেখা হয়েছিল ১৯৪৯ সালের ২ জুলাই।
এই জাদুঘর ও সংগ্রশালাটিতে একটি লাইব্রেরিও রয়েছে। যেখানে রয়েছে শুধু ভাষা আন্দোলনের বই। এখানকার অফিস সহকারী গোলাম মোস্তফা জানান, এখানে ভাষা আন্দোলনের বিষয় নিয়ে প্রায় এক হাজার বই রয়েছে যা আপনি অন্য কোথাও পাবেন না। এই বইগুলো পড়তে হলে আপনাকে এখানেই আসতে হবে।
তিনি আরও জানান, লাইব্রেরিটিকে ডিজিটালে রূপান্তরের কাজ চলছে। সেই সঙ্গে ডিজিটাল ছবির আর্কাইভও হবে।
জাদুঘরটির ভেতরে ভাষা আন্দোলনের সময় তোলা বেশ কিছু ছবির পাশাপাশি বরকতের দুটো ছবি আছে। রয়েছে মুর্শিদাবাদে বরকতের বাড়ির ছবি। কিশোর বরকতের ছবিটিও দৃষ্টি কাড়বে আপনার।
জাদুঘরটি প্রতিদিন সকাল ৯টা ৩০ থেকে বিকেল ৪টা ৩০ পর্যন্ত খোলা থাকে। পাঠ্য বই থেকে এই ভাষাশহীদকে জানার পাশাপশি যদি নিজ চোখে দেখে আরও কিছু জানতে চান তাহলে ঘুরে আসতে পারেন এই জাদুঘর থেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৫