ঢাকা: আধুনিক পৃথিবী একদিনে সৃষ্টি হয়নি। যুগের পর যুগ পার হয়ে আজ মানুষ অত্যাধুনিক পৃথিবীর সফল বাসিন্দা।
কিছু যানবাহন বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আবার কিছু জলযান তলিয়ে গেছে সমুদ্রের গভীরে। গ্রিফিন এমনই একটি জাহাজ।
অনেক অনেক দিন আগের কথা। সপ্তদশ শতাব্দীতে লা সাল্লে তার জাহাজ গ্রিফিন নিয়ে মিশিগান হ্রদের মাঝ দিয়ে যাচ্ছিলেন। গন্তব্য ছিল মিসিসিপি নদী।
কিন্তু ইতিমধ্যেই তিনি জড়িয়ে পড়লেন ঋণের জালে। তাই তিনি নাবিকদের কাছে গ্রিফিনকে বুঝিয়ে দিয়ে অন্যান্য নাবিকদের সঙ্গে ভ্রমণে বের হন। কিন্তু এরপর প্রিয় গ্রিফিনের আর কোনোদিন দেখা পেলেন না তিনি।
সাল্লে গ্রিফিনের দেখা না পেলেও, সম্প্রতি উত্তর আমেরিকার মিশিগান হ্রদের তলদেশে প্রাচীন এক জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পেয়েছেন কেভিন দিকসট্রা ও ফ্রেডেরিক মনরো নামে দুই সমুদ্র সম্পদ আহরণকারী। জাহাজটির তক্তা, বাদামি ও ধূসর জেব্রা ঝিনুক বিশিষ্ট পাখা ও অবশিষ্টাংশ দেখে তারা ধারণা করছেন, এটি গ্রিফিনই হবে।
ফরাসি ভ্রমণকারী রেনে রবার্ট জেভিয়ার ১৬৭৯ সালে গ্রিফিন জাহাজটি তৈরি করেন কিন্তু বছর না যেতেই এটি হারিয়ে যায় মিশিগান হ্রদের অতলে।
দুই মিলিয়ন ডলার মূল্যের স্বর্ণ খোঁজার উদ্দেশ্যে মিশিগান হ্রদের তলদেশে অভিযান চালায় দিকসট্রা ও ফ্রেডেরিক।
তারা জানান, কথিত ১৮০০ সালে মিশিগানে ফেলে দেয়া স্বর্ণ খুঁজতে গিয়েই তারা জাহাজের সন্ধান পান।
পরক্ষণেই তাদের সন্দেহ হয়, হতেও তো পারে এটাই সেই হারিয়ে যাওয়া গ্রিফিন।
কিন্তু হ্রদের তলদেশে পাওয়া জাহাজের অংশবিশেষকে গ্রিফিনের ধ্বংসাবশেষ বলে মেনে নিতে নারাজ বিশেষজ্ঞরা।
এ প্রসঙ্গে লা সাল্লের জার্নালটি ফ্রেঞ্চ থেকে ইংরেজিতে অনুবাদ করা ব্রনডন বেইলড বলেন, এটি আরও পরের সময়কালের হতে পারে। স্টিম ইঞ্জিন দেখে মনে হচ্ছে, আরও উন্নত অর্থনৈতিক সময়কালের জাহাজ।
ঝড়ো আবহাওয়া ও প্রবল বাতাসে জাহাজটি বেসামাল হয়ে যায়। এরপর আর গ্রিফিনকে দেখা যায়নি, যোগ করেন বেইলড।
এ ঘটনায় মিশিগানের পুরাতত্ত্ববিদ ডিন এন্ডারসনের ভাষ্য, এ পর্যন্ত ১৫শ’ জাহাজের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে মিশিগান হ্রদের নিচে। সুতরাং কোনটি যে গ্রিফিনের অংশ তা বলা মুশকিল। এটিই যে গ্রিফিন, তা প্রমাণের জন্য প্রয়োজন আরও নির্ভরযোগ্য তথ্য।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫২ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৫