ঢাকা: হাতের রেখা দেখে ভবিষ্যৎ বলে দেওয়ার রীতিনীতি চলে এসেছে পুরাতন যুগ থেকেই। অনেকে ব্যাপারটিকে বিশ্বাস না করলেও, কিছু লোক ঠিকই রেখা দেখে বলে দেওয়া ভবিতব্য বাণীকে বিশ্বাস করেন।
আচ্ছা এমন কি হতে পারে, কারো হাতই বলে দেবে তার গোটা চরিত্রের উপাখ্যান! বিজ্ঞানীরা তো তাই বলছেন।
তাদের মতে, পুরুষের হাতই হচ্ছে তাদের চরিত্র বোঝার সবচেয়ে সহজ মাধ্যম। সেটা আবার কেমন! এই ধরুন, একজন পুরুষ কতটা ভদ্র ও দয়াশীল বা কতটা রুক্ষ তা বলে দেওয়া যাবে তার হাতের আঙুল দেখেই।
বিজ্ঞানীরা সম্প্রতি আবিষ্কার করেছেন, যেসব পুরুষ তার সহধর্মিণীর প্রতি মনযোগী ও দয়ালু তাদের অনামিকা আঙ্গুলটি তর্জনীর তুলনায় লম্বা হয়। আবার তর্জনী ও অনামিকার দৈর্ঘ্য যদি সমান হয় তাহলে সেই পুরুষ অনেক রুক্ষ মেজাজের। সামান্যতেই তারা বিরক্ত হন ও ঝগড়াঝাটি করেন।
পুরুষের অনামিকার দৈর্ঘ্যকে তর্জনীর দৈর্ঘ্য দিয়ে ভাগ করলে তার মান যদি বেশি হয়, তাহলে নারীদের প্রতি তারা সদা হাস্যোজ্জ্বল, মনযোগী ও প্রীত থাকেন বলে জানিয়েছেন কানাডার ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা।
এদিকে এ গবেষণার প্রধান গবেষক মনোবিজ্ঞানী ডেবি মসকেয়াইটস জানান, দু’টি আঙুলের দৈর্ঘ্যের অনুপাত নারীর প্রতি পুরুষের ইতিবাচক ও নেতিবাচক আচরণের প্রভাব ফেলে। তর্জনীর তুলনায় অনামিকার অনুপাত বেশি হলে পুরুষ তার সহধর্মিণী, মেয়ে বন্ধু ও নারী সহকর্মীদের সঙ্গে হেসে কথা বলা, প্রশংসা করা ও কাজকর্মে অনেক ছাড় দেন।
পাশাপাশি অনুপাত সামান্য বেশি হলে পুরুষরা অন্য পুরুষদের সঙ্গে সামান্য কারণে দ্বন্দ্বে লিপ্ত হলেও নারীদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ বিপরীত আচরণ করেন। অর্থাৎ হাসিখুশি থাকেন। অন্যদিকে, দৈর্ঘ্য যদি প্রায় সমান সমান হয়, তাহলে সেই পুরুষ অন্যান্য পুরুষ ও নারী উভয়ের সঙ্গেই সমান সংঘর্ষে লিপ্ত হন।
এ গবেষণায় অংশ নেন ১৫৫ জন পুরুষ। তাদের সবাইকেই একটি ফর্ম পূরণ করতে দেওয়া হয়। সময় নির্ধারিত ছিল পাঁচ মিনিট। ফর্মে সামাজিক বিভিন্ন কার্যকলাপের উপর নিজেদের আচরণ সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তর দিতে বলা হয়।
বিগত সময়ের গবেষণার উপর ভিত্তি করে গবেষকরা অংশগ্রহণকারীদের আচরণগুলোকে দু’ভাগে ভাগ করেন। ইতিবাচক ও বিবাদপূর্ণ।
এতে দেখা গেছে, যাদের তর্জনীর তুলনায় অনামিকার দৈর্ঘ্য অপেক্ষাকৃত বেশি, তাদের এক তৃতীয়াংশই ইতিবাচক আচরণ করেন ও অল্পসংখ্যক বিবাদপূর্ণ। অন্যদিকে, যাদের এ দু’টি অাঙুলের দূরত্ব প্রায় কাছাকাছি বা একেবারেই কম, তারা প্রায় সবাই বিবাদপূর্ণ আচরণ করেন।
বিগত গবেষণায় দেখা গেছে, যাদের তর্জনীর তুলনায় অনামিকার দৈর্ঘ্য বেশি তাদের সন্তানাদির সংখ্যা অনেক।
এর পেছনে নতুন গবেষণার যুক্তি, যেসব পুরুষেরা তাদের স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদে অসম্মতি প্রকাশ করেন। তারা সারাজীবন একসঙ্গে বসবাস করার ইচ্ছে প্রকাশ করেন বলেই তাদের সন্তানাদির সংখ্যাও বেশি হয়।
মনোবিজ্ঞানী ডেবি জানান, এ দু’টো আঙুলের দূরত্বের সঙ্গে পুরুষের টেসট্রোজেন হরমোন নিঃসরণের ব্যাপারটি জড়িত। ফলে যাদের অনামিকার দৈর্ঘ্য বেশি, তারা নারীদের প্রতি বেশী মনোযোগী ও আকৃষ্ট হন।
তবে হরমোন ও এ অনুপাতের যোগ-সংযোগ নিয়ে বিজ্ঞানীরা নিজেরাই বেশ দ্বিধায় রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০২২৪ ঘণ্টা, মার্চ ১৭ , ২০১৫