ঢাকা: যারা ডায়েট কন্ট্রোল করেন তারা ভাতের পরিবর্তে নিশ্চয় রুটিকে বেশি প্রাধান্য দেন। তবে পাস্তা, স্যান্ডউইচ, স্প্যাগেটিকে স্ন্যাকস হিসেবে মেনে নিলেও দুপুর বা রাতের ভারী খাবার হিসেবে এগুলোকে মানতে অনেকেই নারাজ এখনও।
অনেকেই ভাবেন ভাতে যে পরিমাণ ক্যালরি রয়েছে তা হয়তো রুটি বা স্প্যাগেটিতে নেই। ভাতের বদলে আটা বা ময়দার তৈরি এসব খাবার খেলে শরীরের চাহিদা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে বলে মনে করেন তারা। তবে পুষ্টির দিক থেকে ভাত, আটা বা ময়দার গুণাগুণ প্রায় কাছাকাছিই।
পুষ্টি উপাদান
গবেষণায় দেখা গেছে, ভাতের তুলনায় রুটিতে ক্যালরির পরিমাণ অনেক বেশি। এককাপ সিদ্ধ আটায় রয়েছে ২২৮ কিলোক্যালরি, যেখানে এককাপ ভাতে থাকে মাত্র ১৯৪ কিলোক্যালরি। একই সঙ্গে এককাপ ভাত ও রুটিতে কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ যথাক্রমে ৪১ ও ৫১ গ্রাম। এছাড়াও রুটি ভাতের তুলনায় অনেক বেশি প্রোটিনসমৃদ্ধ।
এককাপ সিদ্ধ আটায় আছে সাত গ্রামের মতো প্রোটিন, যেখানে এককাপ ভাতে ৫ গ্রাম প্রোটিন থাকে। প্রোটিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সুস্থ টিস্যু গঠনে সহায়তা করে। রুটির ওপর নির্ভরর্শীলতা মানে হৃৎপিণ্ডের উপযোগী ফাইবারের যোগান দেওয়া। এককাপ ভাতে ফাইবারের পরিমাণ ১.৪ শতাংশ। অন্যদিকে প্রতিকাপ আটায় রয়েছে ৮.৫ গ্রাম ফাইবার। যুক্তরাষ্ট্রের ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের নির্ধারণ অনুযায়ী, একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের শরীরে দৈনিক ফাইবারের প্রয়োজনীয়তা ২৩ শতাংশ ও নারীর ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ।
ভিটামিন
ফাইবার, প্রোটিন ও কার্বোহাইড্রেটের মতো ভাত ও রুটির ভিটামিনের দিক থেকেও তারতম্য রয়েছে। ভাত ভিটামিন বি-৯ এর ভালো উৎস। ভিটামিন বি-৯ প্রেটিন জাতীয় খাদ্য পরিপাকে সহায়তা করে ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এককাপ ভাতে ২১৫ মাইক্রোগ্রাম বা ৫৪ শতাংশ ভিটামিন বি-৯ রয়েছে, যেখানে এককাপ সিদ্ধ আটায় থাকে ২৮ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন বি-৯।
আবার গমে নিয়াসিন বা ভিটামিন বি-৩ এর পরিমাণ ভাতের চেয়ে একটু বেশি। ভিটামিন বি-৩ শরীরে শক্তি উৎপাদন করে ও ত্বকে পুষ্টি যোগায়। এককাপ সিদ্ধ আটায় ৩.৬ মিলিগ্রাম নিয়াসিন থাকে। যেখানে এককাপ ভাতে থাকে ৩.২ মিলিগ্রাম নিয়াসিন। ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী দৈনিক একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের ২৩ শতাংশ ও নারীর ২৬ শতাংশ নিয়াসিন নেওয়া প্রয়োজন।
মিনারেল
ভাত ও গম দু’টোই কপার ও আয়রনের ভালো উৎস। তবে গম ভাতের চেয়ে অনেক বেশি জিংক সমৃদ্ধ। এককাপ আটায় রয়েছে ২.৩ মিলিগ্রাম জিংক, যেখানে ভাতে জিংকের পরিমাণ ০.৬ মিলিগ্রাম। ইনস্টিটিউট অব মেডিসিনের পরামর্শ অনুযায়ী নারীদের দৈনিক ২৯ শতাংশ ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ২১ শতাংশ জিংকের প্রয়োজন। জিংক প্রোটিনের সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে জিনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ও স্নায়বিক কার্যকলাপ অক্ষত রাখে।
বাংলাদেশ সময়: ০১২৫ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৫