ঢাকা: ডাইনোসর সবসময়ই বহুল আলোচিত বিষয়। প্রাগৈতিহাসিক যুগে পৃথিবীজুড়ে এদেরই রাজত্ব ছিল।
বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সময়ে বিচ্ছিন্নভাবে পাওয়া গেছে নানা প্রজাতির ডাইনোসরের দেহাবশেষ। এসব দেহাবশেষের আকার, গঠন, প্রাপ্তিস্থান ও পরিবেশের উপর নির্ভর করে বিজ্ঞানীরা ডাইনোসরের নানা প্রজাতি সনাক্ত করেছেন। আলাদা করেছেন তৃণভোজী ও মাংশাসী ডাইনোসরের প্রজাতি।
যুগের সঙ্গে সঙ্গে এসব গবেষণার ফলাফল হচ্ছে আরও সত্যনির্ভর। এতকিছু বলার কারণ, সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, তারা ডাইনোসরের নতুন এক প্রজাতি আবিষ্কার করেছেন।
ধারণা করা হচ্ছে প্রাগৈতিহাসিক যুগের সবচেয়ে বড় প্রজাতির ডাইনোসরদের মধ্যে এরা ছিল অন্যতম।
রাশিয়ান গবেষকরা জানান, তারা সাইবেরিয়ান নদীর সৈকতে সাত বছর আগে নতুন আকৃতির এক ডাইনোসরের দেহাবশেষ খুঁজে পেয়েছেন, যা কিনা চমকপ্রদভাবেই অন্যান্য সব ডাইনোসরদের চেয়ে আলাদা।
এর আগে, এই আকৃতির কোনো ডাইনোসরের প্রতিকৃতি লোকসম্মুখে আসেনি।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, পৃথিবীতে দৈত্যাকৃতির এ ডাইনোসরটির বসবাস ছিল এখন থেকে প্রায় একশ মিলিয়ন বছর আগে ক্রিটেসিয়াস যুগে।
তারা এটাও জানান, ডাইনোসরটি আকার-আঙ্গিকে নতুন হলেও, এর সঙ্গে টাইটানোসর প্রজাতির খানিকটা মিল রয়েছে। বিভিন্ন প্রজাতির ডাইনোসরের মধ্যে টাইটানোসরকে অনেক আগেই পৃথিবীর সবচেয়ে বড় দানবাকার প্রাণীদের দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
গবেষকদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, টাইটানোসরের ওজন ছিল প্রায় একশ টন ও উচ্চতা ১শ’ ৩২ ফুট অর্থাৎ নয়টি দোতলা বাসের সমান।
খুঁজে পাওয়া নতুন দেহাবশেষ প্রাথমিকভাবে পর্যবেক্ষণ করার পর রাশিয়ার তোমস্ক স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ভেবেছিলেন, এটা হয়তো বিশাল তৃণভোজী কোনো ডাইনোসর হবে।
বিস্তর গবেষণার পর তারা দেখেন, এ ধরনের ডাইনেসর এর আগে কখনও আবিষ্কৃত হয়নি। বিশাল উচ্চতার এ ডাইনোসরটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘সিবিরোসরাস’।
সাইবেরিয়ান টাইমসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, এর উচ্চতা প্রায় সাড়ে ৬৫ ফুট। তৃণভোজী এ ডাইনোসরটির দেহাবশেষ পাথুরে এলাকা থেকে উদ্ধার করে তোমস্ক স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নজীববিদ্যা ও ঐতিহাসিক ভূতত্ত্ববিদ্যা বিভাগের রিসার্চ ফেলো স্টিপান ইভান্তসোভ জানান, আমরা যখন ডাইনোসরটির দেহাবশেষের অংশগুলো পর্যবেক্ষণ করি, তখনই পরিষ্কার বুঝতে পারি, এটি বৃহৎ তৃণভোজী সরোপড গোত্রেরই হবে।
তিনি আরও জানান, আমাদের পরীক্ষা-নিরিক্ষার কাজ প্রায় শেষ। আমরা এখন নিশ্চিতভাবেই বলতে পারছি, এটি ডাইনোসরের ভিন্ন এক প্রজাতি। মহাজাতিও বলা চলে। যা এর আগে আবিষ্কৃত হয়নি।
সিবিরোসরাসের দেহাবশেষের সবচেয়ে বড় অংশটি ২০০৮ সালে দক্ষিণ-পশ্চিম সাইবেরিয়ার কেমেরোভো এলাকার শেস্টাকোভো গ্রামে কিয়া নদীর উপকূলে পাওয়া যায়।
ধারণা করা হচ্ছে, ১৯৯৫ সালে একই স্থানে পাওয়া ডাইনোসরের পা সিবিরোসরাস ডাইনোসর প্রজাতির হতে পারে। সাইবেরিয়ায় আবিষ্কৃত হয়েছে বলেই মূলত এর নাম প্রথমে সিবির ও পরবর্তীতে সিবিরোসরাস রাখা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৫
এসএস/