ঝিনাইদহ: অভাবের কারণে কায়িক শ্রমকেই বেছে নিতে হচ্ছে ঝিনাইদহের হতদরিদ্র পরিবারের শিশুদের। অনেক ক্ষেত্রে এসব পরিবারের বাবা-মায়েরাও বাড়তি আয় রোজগারের আশায় সন্তানদের স্কুলে না পাঠিয়ে দিচ্ছেন এমন সব কাজে, যা শিশুদের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।
ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থিত বিভিন্ন গাড়ি মেরামতের গ্যারেজে এদের অনেকেই করছে ভারি কাজ। যদিও এসব কাজ শিশুশ্রম আইনে নিষিদ্ধ।
সেখানে কাজ করে এমন শিশুদের সঙ্গে কথা হয় এ প্রতিবেদকের। তাদের একজন মানসিক প্রতিবন্ধী গালিব জানায়, সে সেখানে শ্যালো মেশিন মেরামত ও ধোয়ামোছার কাজ করে প্রতিদিন ১০-২০ টাকা পায়। এর সবটাই তুলে দেয় মায়ের হাতে।
একই গ্যারেজে কর্মরত গালিবের সমবয়সী শাওন জানায়, তার পরিবারে আছে মা, বাবা, ভাই ও বোন। তার বাবা রাজমিস্ত্রীর কাজ করেন। গ্যারেজে কাজ করে সে যে টাকা আয় করে, তার সবটায় পরিবারে দিয়ে দেয়। পড়ালেখা করো না কেন- জানতে চাইলে তার উত্তর, মা পড়াইতে চাইলেও, বাবা চায় না।
পাশের আরেকটি গ্যারেজে কাজ করে অনিক। থাকে খালা বাড়িতে। সে জানায়, ক্লাস ফোর পর্যন্ত পড়ালেখা করেছে। মা-বাবা চলে যাওয়ার পর আর লেখাপড়ার সুযোগ হয়নি। তার ছোট ভাইও একটি বীজের দোকানে কাজ করে।
এ বিষয়ে গ্যারেজের মালিক সাইদুর রহমান বলেন, এই শিশুদের আমি কাজ না দিলে, অন্য কেউ কাজ দিত। ওদের মুখের দিকে চেয়ে কাজ দিয়েছি। পড়ালেখা করানোরও অনেক চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওদের পরিবারের লোকজন পড়াতে চায় না। আর এসব শিশুরাও আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছে।
এসব ছিন্নমূল শিশুদের ঝরে পড়ার হাত থেকে রক্ষার জন্য সরকারি ও বেসরকারি নানা কর্মসূচি কাগজে-কলমে থাকলেও বাস্তব বলছে ভিন্ন কথা। বাস্তবে নামে মাত্রই এসব কর্মসূচি রয়েছে, কাজে খুব একটা নেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৭, ২০১৫
আরএম