নাছোড়বান্দা ফটোশিকারিদের আপনি ‘পাপারাজ্জি’ বা ‘পাপারাৎসি’ যে নামেই ডাকুন, এরা কিন্তু সেলিব্রেটিদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলতে ওস্তাদ। স্বভাবে ওরা যাকে বলে পাজির পা-ঝাড়া।
ইউরেশিয়ান ঈগল-পেঁচা থাকে মূলত গভীর অরণ্যে। কিন্তু হঠাৎই শহরের একটি বাড়ির ছাদে দেখা মেলে বিশালাকায় এক ঈগল-পেঁচার। খবর পেয়ে ফটোশিকারিরা সেদিকে ছোটে দলে দলে। পক্ষীবিদ ভদ্রলোকও ছোটেন তার ক্যামেরা নিয়ে। কিন্তু এতো এতো ক্যামেরাধারী মানুষের উপস্থিতি পেঁচাটির মোটেই ভালো লাগেনি। এক পর্যায়ে সবাই ক্যামেরা নিয়ে ওর খুব কাছে চলে যায়। তখনই বেরসিক পেঁচাটি যায় ক্ষেপে। তৎক্ষণাৎ সে বিশাল ডানা ঝাপটাতে ঝাপটাতে উড়ে আসে ফটোশিকারিদের দিকে। সবচে কাছে ছিলেনি ওই পক্ষীবিদ। তাই সে গিয়ে বসে তাঁর চাঁদির ওপর। সেখানে বসে সে ক্রোধে চোখ পাকাতে থাকে।
বেচারা পক্ষীবিদের চাঁদিতে চুল এতো কম ছিল যে, চাইলে বিশাল নখর দিয়ে পেঁচা তার চাঁদি ফালা ফালা করে দিতে পারতো। কিন্তু না, পেঁচা তার খুলিতে নখের আঁচর বা ঠোঁটের ঠোকর কিছুই দেয়নি। ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড চাঁদির ওপর বসে থেকে এক সময় পেঁচার রাগ পড়ে যায়। সে উড়ে যায় তার আশপাশের গাছপালার দিকে। এভাবে হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন বর্ষীয়ান পক্ষীবিদ। একটা সংবাদমাধ্যম লিখেছে: ‘He's behind you! Extremely rare owl surprises bird snapper waiting to take its picture
এই ঈগল পেঁচার নখ ও ঠোঁটের আকার এতো বড় হয় যে এরা অনায়াসে বড়সড় খরগোশ ছোঁ-মেরে নখরে গেঁথে উড়ে যেতে পারে। তাই ওই ভদ্রলোকেরও বড় বিপদ হতে পারতো। ক্রুদ্ধ পেঁচাটি হঠাৎই যখন তার প্রায়-চুলহীন চাঁদিতে উড়ে গিয়ে বসল, তখন তো তিনি ভয়ে কাঠ! অন্যদের কাছে অবশ্য এই দৃশ্য ছিল হাসির খোরাক। যাকে বলে ‘‘কারো পৌষ মাস, কারোর বা সবর্নাশ। ’’
নইলে কি আর "Everyone was laughing but he was in complete shock and just stood there very still." পেঁচাটি উড়ে চলে যাবার পর বেচারা পক্ষবিদ প্রথমেই নিজের চাঁদিতে হাত বুলিয়ে দেখলেন রক্তটক্ত বেরিয়েছে কিনা। অবশ্য রক্ত না ঝরলেও ধারালো নখের দাগ ঠিকই রয়ে গেছে তার প্রায়-চুলহীন অরক্ষিত চাঁদিতে।
বাংলাদেশ সময়: ০২০১ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩০, ২০১৫
জেএম