শাভি! একটি মাদি কুকুরের নাম। গত বছর শীতকালে রাশিয়ার রোস্তভ অবলাস্ট এলাকার এক সড়ক দিয়ে চলার সময় চলন্ত এক গাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে তার।
সেখানে ওর প্রাথমিক চিকিৎসার পর অনলাইনে জানানো হয় আবেদন---যদি কোনো হৃদয়বান ওকে সারিয়ে তুলতে আগ্রহী হন, এই ভেবে। মাত্র একজন সেই আবেদনে দিলেন সাড়া। নাম তার নিনা বারানোভ্স্কায়া। ২৬ বছর বয়স্কা বারানোভস্কায়া শাভির পেছনের ভাঙা দু’পায়ে অস্ত্রোপচার শেষে শাভিকে নিয়ে গেলেন রোস্তভ-অন-ডন শহরে তার নিজের ফ্ল্যাটবাড়িতে। সেখানে তিনি তার ছোট মেয়ে ও বেশ ক’টা পশুপাখি নিয়ে থাকেন। তিনি মমতাময়ী মায়ের মতো পরম স্নেহে সেবা-শুশ্রুষা করে যেতে লাগলেন শাভির। ওকে আবার হাঁটাতে শেখালেন, ওকে আবার চলাফেরায় সক্ষম করে তুললেন।
প্রতিদিনই এভাবে শাভির সেবায় নিজের সবটুকু উজার করে দিলেন এই দরদী নারী। শুরুর দিকে সবচে কষ্টকর ব্যাপার ছিল শাভির প্রস্রাব -পায়খানা পরিষ্কার করার কাজটা। তাতেও দমেননি তিনি। সুস্থ হবার পরও শাভির গাড়ি-আতঙ্ক যাচ্ছিল না। গাড়ি দেখলেই ও ভয়ে কুঁকড়ে যেতো। সেই ভয়ও ধীরে ধীরে দূর করলেন তিনি। (লিংকটা দেখুন: http://metro.co.uk/2015/11/28/dog-walks-200-miles-to-find-woman-who-nursed-her-back-to-health-after-hit-and-run-accident-5530939/)
এ ব্যাপারে সংবাদমাধ্যমের খবরের শিরোনাম: ‘Dog ‘walks 200 miles to find woman who nursed her back to health after hit-and-run accident.’
কিন্তু এভাবে নিজের কাজকর্ম ফেলে তো আর দীর্ঘদিন শাভিকে লালনপালন সম্ভব নয়! তাই তিনি ১৮৫ মাইল দূরের একটা একটা পশু-নিবাসে ওকে রেখে এলেন অগত্যা।
কিন্তু তারপর একদিন ঘটলো অবিশ্বাস্য ঘটনাটা। শাভি পশু-নিবাস থেকে পালিয়ে খুঁজতে শুরু করলো তার ‘মানুষ-মা’কে। একসময় ঠিকই পৌনে দুশ মাইল পথ পাড়ি দিয়ে হাজির হলো নিনা বারানোভস্কায়ার বাড়িতে। সে এক হৃদয়কাড়া, আবেগমথিত স্বর্গীয় দৃশ্য। শাভিকে পেয়ে আনন্দে-আবেগে কেঁদে বুক ভাসালেন নিনা। এমন মধুর কান্না ক’জনই বা কাঁদতে পারে আজকের এই নিঠুর দুনিয়ায়!
বাংলাদেশ সময়: ০১১৯ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৪, ২০১৫
জেএম