পারস্পরিক আলাপচারিতা শিশুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হবার সবচেয়ে ভালো উপায়। এ পদ্ধতি শিশুর সঙ্গে দৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলতে এবং শিশুর ইতিবাচক শিক্ষা বৃদ্ধিতে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
জানতে চান
বিভিন্ন বিষয়ে শিশুর কাছে জানতে চান আর তাকে বলতে দিন—যেভাবে সে চায়। এই প্রক্রিয়া তাকে নতুন শব্দ শিখতে সাহায্য করবে। কাল্পনিক গুণাবলী সমৃদ্ধ শব্দ দিয়ে বিভিন্ন নাম বর্ণনা করুন। আপনি এভাবে বলতে পারেন—“দেখো কী সুন্দর ফুল! এর বৃত্তগুলো সবুজ, পাঁপড়ি ল্যাভেন্ডার আর এর লম্বা স্টিকগুলো সোনালি হলুদ। কী, দেখতে খুব মজা না?”
কাজ করতে করতে গল্প বলুন
আপনার কাজকর্মে তাকে সঙ্গে রাখুন আর বিভিন্ন শিক্ষণীয় গল্প বলুন। এতে শিশু কাজে উৎসাহ পাবে, সময় ভালো কাটবে, আপনার বন্ধু হয়ে যাবে। সর্বোপরি এক সুদৃঢ় বন্ধন তৈরি হবে আপনাদের মধ্যে। ধরুন, সোনামণিকে নিয়ে লাইব্রেরিতে গেছেন, জানতে চান—“এখানে কী দেখছো বাবা? বলো তো এগুলো কী? এগুলো পড়লে কী হয়। ” মনে রাখবেন, তার প্রতি আপনার মনোযোগ, পর্যবেক্ষণ ও মন্তব্যে সে লাভবান হবে। শিশুর নিজস্ব ভাবনা, সমস্যা ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলুন। তাকে জানতে চান। শিশু বুঝতে পারবে, নিজের এমন সব বিষয় আশয়ও শেয়ার করতে পারেন।
গুরুত্ব দিয়ে শুনুন ও বলুন
যতটা সম্ভব মনোযোগ ও গুরুত্ব দিয়ে তার কথা শুনুন। প্রতিক্রিয়া বাদ দিন। শিশু যখন বলছে, শোনার সময় দৃষ্টি বিনিময় করুন, সহজবোধ্য পয়েন্ট নিয়ে আলোচনা করুন। আপনি যা বুঝলেন তা নিজের ভাষায় বলুন। আপনার ভাবনা তার কাছে কঠিন মনে হতে পারে। যতটুকু সম্ভব সহজ ভাষায় তাকে বুঝিয়ে বলুন। আপনার সব কথা হয়ত শিশু নাও বুঝতে পারে, তাতে সমস্যা নেই। এ প্রক্রিয়ার মধ্যদিয়ে না বোঝা বিষয়-আশয়ে বোঝার আগ্রহ তৈরি হবে শিশুর।
সিদ্ধান্ত নিতে দিন
কোনো কোনো বিষয়ে শিশুকে সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ দিন। এতে ব্যক্তি হিসেবে তার মূল্যবান অন্তর্দৃষ্টি, ধারণা ও চিন্তা-চেতনা বৃদ্ধি পাবে। যেমন বাজার করতে গিয়ে বলতে পারেন—“কোন ধরনের ফলমূল আমাদের কেনা উচিত মা?” বা “কোন রঙের আপেল তুমি সবচেয়ে পছন্দ করো?” বা “কোন মাছ খেতে তোমার বেশি ভালো লাগে। আজ তোমার পছন্দের মাছ কিনতে চাই। ”
সুযোগ পেলেই একটু বাড়তি কিছু করুন
একত্রে হাঁটতে হাঁটতে শিশুর সাথে নানা ধরনের ননভার্বাল ইন্টারেকশন করুন। খুব গুরুত্বপূর্ণ হলো, শিশুর সঙ্গে দৃষ্টি বিনিময় করে কথা বলা। শিশুর সঙ্গে আন্তরিক ভঙ্গিতে হাসুন। সুযোগ পেলেই একটু বাড়তি স্নেহ-মমতা দেখান। যেমন, কোলে তুলে নিন বা কাঁধের উপর আগলে রাখুন। ভালোবাসাপূর্ণ আলিঙ্গন ও চুমুতে ভরিয়ে দিন আপনার আদরের ছোট্ট সোনামণিকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৮ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩, ২০১৫
টিকে