ঢাকা: ট্রাক থেকে নামানো হচ্ছে একটি পর একটি ছোট ছোট টিনের কন্টেইনার। সাদা কন্টেইনারগুলোর মধ্যে কী আছে জিজ্ঞেস করতেই শ্রমিকরা জানালেন, লিকুইড খেজুর গুড়।
পুরো শীত মৌসুমে এভাবে প্রতিরাতে রাজশাহী ও ফরিদপুর অঞ্চল থেকে আসে খেজুর গুড়।
সোমবার (৮ ফেব্রুয়ারি) দিনগত মধ্যরাতে রাজধানীর বাদমতলীর আহসান উল্লাহ রোড এলাকায় বিভিন্ন গুদামে তোলা হচ্ছিলো এসব কন্টেইনার।
শ্রমিকরা জানান, প্রতিটি কন্টেইনারে ২৬/২৭ কেজি গুড় রয়েছে। প্রতি কেজির পাইকারি দর ৫২ থেকে ৫৩ টাকা। শীতের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রায় তিন মাস প্রতিরাতে একাধিক ট্রাকে করে আনা হয় এসব লিকুইড খেজুর গুড়। আর তা খুচরা পাইকাররা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করেন।
শরীফ অ্যান্ড সন্স নামে পাইকারি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আড়তে খেজুর গুড়ের কন্টেইনার তুলছিলেন আজিজুল হকসহ বেশ কয়েকজন শ্রমিক।
আজিজুল বাংলানিউজকে বলেন, এগুলো খাঁটি খেজুর গুড়। তাই খেতে খুব সুস্বাদু। এসব কন্টেইনার ভর্তি করে নাটোর থেকে ট্রাকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে রাজশাহীর বিভিন্ন এলাকায় এই গুড় তৈরি করা হয়ে থাকে। আর ফরিদপুর থেকে মুছি গুড় ঝুড়িতে করে আনা হয়।
তিনি জানান, বাদামতলী পাইকারি বাজারে প্রায় ৯টি আড়ত রয়েছে। রাজশাহী ও ফরিদপুর থেকে যেসব গুড় আসে সেগুলো এসব আড়তে রাখা হয়। সকাল থেকেই বাজারে খুচরা পাইকাররা আসেন এসব গুড় নেওয়ার জন্য। এরপর নির্দিষ্ট দরদামে খুচরা পাইকারদের কাছে এসব গুড় বিক্রি করা হয়।
শুধু গুড়ই নয় বাদামতলী বাজারে আসে দেশি-বিদেশি বিভিন্ন ফল। সোমবার দিনগত গভীর রাতে শ্রমিকরা আরেকটি ট্রাক থেকে নামাচ্ছিলেন ভারত থেকে আসা আঙ্গুর।
জিল্লুর এন্টারপ্রাইজ নামে প্রতিষ্ঠানের সামনে মেঝেতে রাখা হচ্ছিলো আঙ্গুরের শত শত ঝুড়ি। ঠান্ডা রাখতে এসব ফলে সিলিং ফ্যানের বাতাস দেওয়া হচ্ছিলো। রাতে প্রতিষ্ঠানের পক্ষে শ্রমিকদের সমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করছিলেন মো. শহীদ।
তিনি বলেন, এক ট্রাকে ৮শ’ ঝুড়ি আঙ্গুর আনা হয়। এজন্য বাংলাদেশ সরকারকে সাড়ে ৭ থেকে ৮ লাখ টাকা শুল্ক দিতে হয়। এছাড়া ট্রাক ভাড়া, শ্রমিকদের মজুরি ও অন্যান্য খরচ তো আছেই। এরপর প্রতি ঝুড়ি ফল ২৫০০ থেকে ২৬০০ টাকায় বিক্রি করতে হয়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৬
টিএইচ/আরএম