খাগড়াছড়ি: পাহাড়ে প্রাকৃতিকভাবে জন্মে ঝাড়ু ফুল বা উলু ফুল। ঝাড়ু ফুল শুকিয়ে আঁটি বেঁধে তৈরি করা হয় ফুলঝাড়ু।
প্রাকৃতিকভাবেই পাহাড়ের বনে জঙ্গলে জন্ম নেয় ঝাড়ু ফুল তথা উলু ফুল। স্থানীয় বাসিন্দারা পাহাড় থেকে সংগ্রহ করে স্থানীয় বাজারে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করেন। মৌসুমী ব্যবসায়ীরা কাঁচা এই ফুল সংগ্রহ করে শুকিয়ে রাখেন। তারপর ১৮-২০টি ঝাড়ু ফুলের কাঠি দিয়ে একটি আঁঠি বাঁধেন। আর এক একটি আঁঠি বিক্রি হয় ১৫/২০ টাকায়।
ট্রাকে করে সমতলের বিভিন্ন জেলায় ফুলঝাড়ু সরবরাহ করা হয়। অন্যান্য বছরের মতো এবারও খাগড়াছড়ি জেলার বিভিন্ন এলাকার উৎসাহী ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ঝাড়ু ফুলের ব্যবসায় নেমে পড়েছেন।
খাগড়াছড়ির ফুলঝাড়ু ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বাংলানিউজকে জানান, ফুলঝাড়ুর ব্যবসা লাভজনক। বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকা থেকে এই ফুল সংগ্রহ করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় আমরা ফুলঝাড়ু সরবরাহ করি। গত বছরের তুলনায় এ বছর ফুলঝাড়ুর চাহিদা বেড়ে গেছে।
তবে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে এই ফুলঝাড়ু সরবরাহ করতে সড়কের বিভিন্ন স্থানে চাঁদা দিতে হয় বলে অভিযোগ করেছেন অনেক ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ী জাকির ও রকি ত্রিপুরা বাংলানিউজকে জানান, খাগড়াছড়ির বাইরে এক ট্রাক ফুলঝাড়ু সরবরাহ করতে প্রায় ৩০/৪০ হাজার টাকা বন বিভাগ, পুলিশ ও চাঁদাবাজদের দিতে হয়। আর টাকা দিতে না চাইলে গাড়িসহ মাল আটকে রাখে। পুলিশ গাড়িতে অবৈধ জিনিস আছে বলে হেনস্তা করে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আহসানুল হক শাহীন বলেন, লাভজনক এই ব্যবসায় অনেকে আসতে চায়। কিন্তু আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে আসতে পারছে না। যদি এই খাতে ঋণ দেওয়া হয় তাহলে সরকার এই ব্যবসা থেকে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারবে। অনেক বেকার যুবকের কর্মসংস্থান হবে।
খাগড়াছড়ি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মোমিনুর রশিদ জানান, প্রাকৃতিকভাবে ঝাড়ু ফুলের আবাদ হলেও এর বাণিজ্যিক সম্ভাবনা খুবই ভালো। দেশের চাহিদা পূরণ করে এখন ফুলঝাড়ু বিদেশেও রফতানি হচ্ছে।
রাজস্ব প্রদানের মাধ্যমে চলাচল পাস নিয়ে ব্যবসায়ীরা ঝাড়ু ফুলের ব্যবসা করে আসছেন। ২০১৫ সালে এ খাত থেকে ৫ লাখ ২৮ হাজার ৫০০ টাকা রাজস্ব আদায় হয়েছে।
বন বিভাগের কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে তিনি বলেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৬
এমজেড/জেডএম