ঢাকা: বাকরখানি। পুরান ঢাকার ঐতিহ্যবাহী খাবার।
নতুন করে বাকরখানির খোঁজে যাওয়ার আগে উইকিপিডিয়ায় পড়ে নেওয়া হলো ইতিহাসটা। সেটি এমন– ‘জমিদার আগা বাকির খাঁর নামানুসারে এ রুটির নামকরণ করা হয়। নবাব মুর্শিদ কুলী খাঁর দত্তক ছেলে আগা বাকের। মুর্শিদাবাদের নর্তকি খনি বেগমের সঙ্গে তার গভীর প্রেম ছিল বলে কথিত আছে। তার আবিষ্কৃত ও প্রিয় খাদ্য বিশেষভাবে তৈরি রুটির নাম তার প্রেমকাহিনীর উপর ভিত্তি করেই নামকরণ করা হয়েছিল বাকের-খনি রুটি।
পরবর্তীতে এই নাম কিছুটা অপভ্রংশ হয়ে বাকরখানি নাম ধারণ করে। জনশ্রুতি মেনে নিলে ধরে নিতে হয়, বাকরখানির সৃষ্টি আঠারো শতকের মাঝামাঝি সময়ে। ’
ইতিহাস পড়ে নেমে পড়লাম বাকরখানির খোঁজে। খুঁজে পেতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে ঢুকতেই চোখে পড়লো বেশকিছু দোকান। তার মধ্যে একটা দোকানে ঢুকে পড়া।
কথা হচ্ছিলো দোকানের পুরনো কর্মচারী মোসাব্বিরের সঙ্গে। তিনি এই কাজ করছেন প্রায় ১৫ বছর ধরে।
মোসাব্বির জানান, আগের চেয়ে এখন বাকরখানির চাহিদা বেশ বেড়েছে। প্রতিদিন প্রায় ১০০ কেজির মতো বাকরখানি বানান তারা। ভোর ৫ থেকে দুই শিফটে কাজ চলে বেলা ১১টা পর্যন্ত।
বিভিন্ন ধরনের বাখরখানির মধ্যে পনির, ঘি, নোনতা প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। ৩০০ থেকে ১১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বিশেষভাবে তৈরি করা বাকরখানির কিছুটা দাম বেশি পড়ে।
তেল, ময়দা, পানি, লবণই বাকরখানির মূল উপাদান। ২/৩ ঘণ্টা আটার খামির বানিয়ে রেখে সেটা নির্দিষ্ট সাইজে এনে পরিমাণ অনুযায়ী পনির/ঘি/চিনি/মাংস বিভিন্ন রকমের উপকরণ দিয়ে সেটা আবার বিশেষ এক ধরনের চুলায় ১৫/২০ মিনিট রাখতে হয়।
ব্যস হয়ে গেলো বাকরখানি। তৈরির পর প্রায় মাস খানেক পর্যন্ত এর মেয়াদ থাকে।
কেউ অর্ডার দিয়ে বানাতে চাইলে সেটাও সম্ভব। নিজের মতো মাংস বা মিষ্টি ব্যবহার করে বানিয়ে নিতে খরচ পড়বে প্রতি পিস ৫ টাকা। সেক্ষেত্রে উপাদান দিতে হবে গ্রাহককেই।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১১ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৬
এএ