সমাধিটির সন্ধান মেলে রাশিয়ার ভ্লাদিমির শহরের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে অবস্থিত সাংঘির নামে একটি স্থানে। দু’টি বালককে এখানে সমাহিত করা হয়।
একটি সরু-লম্বা সমাধিতে বালক দু’টিকে একসঙ্গে কবর দেওয়া হয়। সমাধিতে তাদের মাথার অবস্থান ছিল পাশাপাশি এবং পায়ের অবস্থান বিপরীত দিকে। সমাধিতে দেহাবশেষ ছাড়াও পাওয়া যায় হাতির দাঁতের তৈরি প্রায় ১০ হাজার জপমালা, ৩০০ শিয়ালের দাঁত এবং ২০টি বাহুবন্ধনী। এগুলো প্রস্তরযুগে মূল্যবান ধন-সম্পদ হিসেবে ব্যবহৃত হতো। এছাড়াও সমাধিটিতে হাতির দাঁতের বর্শা ও হরিণের শিং পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা।
বালক দু’টির সমাধিতে এতো সংখ্যক ধন-সম্পত্তির সন্ধান অবাক করেছে গবেষকদের। একই এলাকায় পাওয়া প্রস্তরযুগের একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সমাধিতে এসব ধনসম্পদ পাওয়া যায় অল্প পরিমাণে।
প্রত্নতত্ত্ববিদ এরিক ট্রিনকাউস বলেন, প্রাচীন মানুষদের সৎকার প্রথা সম্পর্কে গবেষণা চালিয়ে আমরা জানতে পারি, বড়দের সৎকার পদ্ধতিদের তুলনায় শিশুদের সৎকার পদ্ধতি বেশ আলাদা। শিশুদের সমাধিতে সাধারণত অল্প সংখ্যক ধন-সম্পদ রাখার প্রচলন ছিল।
একই স্থানে মোট ১০টি সমাধির সন্ধান মেলে। এগুলোমধ্যে বালক দু’টির সমাধি সবচেয়ে বেশি ভাবাচ্ছে গবেষকদের। প্রস্তররযুগের শিশুদের কখনও এমন জাঁকজমকপূর্ণভাবে সমাহিত করা হতো না।
গবেষকরা দেহাবশেষগুলো পরীক্ষা করে জানান, জীবদ্দশায় তারা বেশ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে ছিল। ১০ বছর বয়সী বালকটির থাইয়ের হাড় খুব খাট এবং অস্বাভাবিকভাবে বাঁকানো। ১২ বছর বয়সী বালকের কংকাল পরীক্ষা করে গবেষকরা বলছেন, সে অনেকদিন শয্যাশায়ী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, বালক দু’টির শারীরিক অক্ষমতার সঙ্গে তাদের জাঁকজমকপূর্ণ সৎকারের সম্পর্ক থাকতে পারে।
প্রায় ২৫ লাখ বছর আগে শুরু হয় মানব সভ্যতার প্রস্তরযুগ। এসময় মানুষ পাথর ও হাড়ের তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করত। মানুষ কুড়াল আবিষ্কার করে প্রায় ৭০ হাজার বছর আগে। মানুষের ব্যবহৃত সবচেয়ে প্রাচীন সরঞ্জামের সন্ধান পাওয়া যায় তানজানিয়ায়।
বাংলাদেশ সময়: ০০২৭ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৮
এনএইচটি/এএ