বায়োজিনোম প্রোজেক্টটি পরিচালিত হচ্ছে ওয়াশিংটনের স্মিথসোনিয়ান ইনস্টিটিউশনের গবেষকদের মাধ্যমে। তাদের বিশ্বাস, পৃথিবীর প্রতিটি জীবের ডিএনএ’র ক্যাটালগটি ভবিষ্যতে ওষুধ, কৃষি গবেষণা ও প্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ক কাজের জন্য গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।
সংস্থাটির একজন গবেষক জন ক্রেস এ বিষয়ক একটি সাক্ষাৎকারে বলেন, আমরা পৃথিবীর সব ধরনের জীবের একটি পরিপূর্ণ লাইব্রেরি তৈরি করতে চলেছি। যা যেকোনো প্রয়োজনে সহজে ব্যবহারযোগ্য হবে। এরমাধ্যমে আমরা প্রকৃতিকে আরও নিবিড়ভাবে জানতে পারবো এবং বিবর্তনের ধারণাটি আরও ভালো করে ফুটে উঠবে।
প্রায় চার দশমিক সাত বিলিয়ন মার্কিন ডলারের (৪০ হাজার কোটি টাকা) এ প্রকল্পটির কাজ এখন পর্যন্ত মাত্র দশমিক দুই শতাংশ এগিয়েছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটি বায়োলজির ইতিহাসের সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্ক্ষী প্রকল্প। কেবল ওষুধশিল্প থেকে মার্কিন অর্থনীতিতে কমপক্ষে এক ট্রিলিয়ন ডলার প্রভাব ফেলবে তা।
তবে শুধু ওষুধশিল্পেই নয়, বিপন্ন প্রাণীদের বিলুপ্ত হয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করবে এ প্রকল্প। কোনো প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে গেলেও ওই প্রাণীর জিনোম থেকে তাকে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হতে পারে। তাই এটিকে নুহের নৌকার সঙ্গে তুলনা করছেন অনেকে, যে পৌরাণিক নৌকায় চড়ে মহাপ্লাবনের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছিল পৃথিবীর সব প্রাণী।
জীববিজ্ঞানে জিনোম বলতে কোনো জীবের সমস্ত বংশগতিক তথ্যের সমষ্টিকে বোঝায়, যা জীবটির ডিএনএ’তে সংকেতাবদ্ধ থাকে। প্রতিটি কোষ জীবের বিকাশ এবং গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনা বহন করে। এই নির্দেশনার সমন্বয়ই হলো জিনোম।
‘জিনোম’ কথাটি প্রথম ব্যবহার করেন জার্মানির হামবুর্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিদ্যার অধ্যাপক হান্স ভিঙ্কলার। তিনি ‘জিন’ ও ‘ক্রোমোসম’-এ দুটি শব্দ জোড়া লাগিয়ে তৈরি করেন জিনোম শব্দটি।
মানুষের জিনোম ডিকোডিং করার প্রকল্পটি শুরু হয় ১৯৯০ সালে। কাজটি শেষ হতে ১৫ বছর সময় লাগার কথা থাকলেও ২০০৩ সালে তা সম্পন্ন হয়। খরচ হয় তিন বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ সময়: ০৪২৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৭, ২০১৮
এনএইচটি/এএ