কেশবপুর উপজেলা শহর থেকে মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্ত সড়কে ঢুকেই পশু-হাটের উত্তর পাশেই টিনের ছাউনি দেওয়া আব্দুল মজিদের বিশাল বাড়িটি। বাড়ির ভিতর প্রবেশ করলে দেখা গেলো, বিশাল আকৃতির ঘরে গবাদিপশু রাখার জন্য চার সারি দড়ি বাঁধার হুক।
জানা যায়, হাটে বিক্রি না হওয়া গরু এই হোটেলে রাখা হয়। এতে গরুপ্রতি খরচ হয় ৪০-৫০ টাকা। তবে খরচের তুলনায় সুবিধাই বেশি বলে জানালেন সবাই।
বরিশালের গরু ব্যবসায়ী ফজলু রহমান বাংলানিউজকে বলেন, হাট থেকে গরু কিনে, ওইদিন রাতেই গাড়িতে লোড করা খুব ঝামেলা হয়ে দাঁড়ায়। তাই গরু এই হোটেলে এক রাত রেখে পরদিন সকালে গন্তব্যে নিয়ে যাই।
তিনি জানালেন, হোটেলে গবাদিপশুর প্রায় সব ধরনের খাবার পাওয়া যায়। রয়েছে গোসলের সুব্যবস্থা। তাছাড়া, মানুষের জন্যেও থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। দূর-দূরান্তের গবাদিপশু ব্যবসায়ীদের কাছে আব্দুল মজিদের এই হোটেলের ব্যাপক নাম-ডাক। সবাই এই হোটেলকে ব্যবসা নয়, বরং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবেই অভিহিত করেন।
হোটেলটি কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা চা’য়ের দোকানের মালিক আব্দুল মমিন জানান, হোটেলটিতে বরিশাল, বাগেরহাট, রামপাল, খুলনা, ঢাকা, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন অঞ্চলের ১৫-২০ জন ব্যবসায়ী প্রায়ই গরু-মহিষ, ছাগল রাখেন। পরে প্রয়োজন অনুযায়ী তারা সেগুলো নিয়ে যান। এই চা’য়ের দোকানের কাস্টমারদের একটি বড় অংশই এসব ব্যবসায়ী ও গবাদিপশুর সঙ্গে থাকা রাখালরা।
গবাদিপশুর হোটেলের মালিক আব্দুল মজিদ জানান, বছর দশেক আগে ১০-১২টি গরু-মহিষ রাখার মতো পরিসরে হোটেল চালু করেন তিনি। তবে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় বছর পাঁচেক আগে ১৯ শতাংশ জমির ওপর ৭১টি গরু-মহিষ ও ছাগল রাখার ব্যবস্থা করা হয়।
বর্তমানে সপ্তাহের দুই হাটবারকে কেন্দ্র করে ২৫-৩০টি গরু থাকে। এছাড়াও বিভিন্ন অঞ্চলের কসাইদের গরু নিয়মিতভাবে থাকে। তবে ঈদের মতো উৎসবগুলোতে হোটেলে শতাধিক গরু-মহিষ রাখা হয়।
আব্দুল মজিদ বলেন, হোটেল থেকে মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় হয়। ইচ্ছা আছে আগামীতে হোটেলটি আরও বড় করার।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৭ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৮
ইউজি/এনএইচটি