বিশেষজ্ঞরা অনেকে ধারণা করেন, এই কফিনেই হয়তো থাকতে পারে গ্রিক বীর আলেকজান্ডারের দেহাবশেষ। আবার কল্পনাবিলাসী অনেকে বলেন, এ কফিনে হয়তো লুকিয়ে রাখা হয়েছে কোনো প্রাচীন অভিশাপ।
অবশেষে খোলা হয় কফিনটি। বিশেষজ্ঞদের মতে, সেখানে আলেকজান্ডারের দেহাবশেষ বা অভিশাপ কোনোটিই নেই। সেখানে পাওয়া যায়, তিনটি মানব কংকাল এবং প্রচণ্ড দুর্গন্ধযুক্ত কিছু লাল তরল। কফিনটি খোলার জন্য একদল প্রত্নতাত্ত্বিকের সমন্বয়ে একটি কমিটি গঠন করে মিশরের পুরাতত্ত্ব মন্ত্রণালয়। কফিনের ঢাকনা মাত্র ২ ইঞ্চি ফাঁক করার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশে। দুর্গন্ধের কারণে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য হয় দলটি। পরে মিশরের মিলিটারি ইঞ্চিনিয়ারদের সহায়তায় ঢাকনাটি খোলা হয়।
মিশরের সুপ্রিম কাউন্সিল অব এন্টিকুইটিসের সেক্রেটারি জেনারেল মোস্তফা ওয়াজিরি জানান, কফিনে তিনজন মানুষের হাড়গোড় পাওয়া গেছে। দেখে মনে হচ্ছে এটি কোনো পারিবারিক দাফন। মমিগুলোর অবস্থা তেমন ভালো নয়, সেখানে কেবল হাড় অবশিষ্ট আছে।
কল্পনাবিলাসী অনেকে আশঙ্কা প্রকাশ করেন, রহস্যময় এই কফিনে হয়তো ফারাওদের অভিশাপ আটকে রাখা হয়েছে। কফিনের ঢাকনা খুললে সেই অভিশাপ পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে।
এ বিষয়ে ওয়াজিরি বলেন, আমিই প্রথম কফিনটির ভেতর আমার মাথা ঢুকিয়ে দিয়েছিলাম এবং আমি এখন ভালোই আছি। কফিনটি খোলায় জগতে অন্ধকার নেমে আসেনি বলে ঈশ্বরকে ধন্যবাদ।
এসবের পরও কফিনটি থেকে বিষাক্ত গ্যাস ছড়িয়ে পড়তে পারে, এমন আশঙ্কায় ওই এলাকার লোকজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকে আবার পালিয়ে গেছেন অভিশাপের ভয়ে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, কফিনের ভেতর পাওয়া ওই তিনজন হয়তো ফারাওদের আমলের সৈন্য ছিলেন। কারণ এদের মধ্যে একজনের মাথার খুলিতে তীরের আঘাত রয়েছে।
কফিনটির উচ্চতা প্রায় ২ মিটার এবং দৈর্ঘ্য ৩ মিটার। এর ওজন ২৭ টন বা ২৪০০ কেজি। ধারণা করা হচ্ছে, কফিনটি টলমাইক যুগের।
প্রত্নতাত্ত্বিকরা এই রহস্যময় কফিন ও এর ভেতর পাওয়া দেহাবশেষ সম্পর্কে জানতে আরও বিস্তারিত গবেষণা চালাবেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৮৫৯ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৮
এনএইচটি