কবির কবিতার মতোই গ্রাম বাংলার মাঠে-ক্ষেতে এখন আমন ধান কাটার শেষ মুহূর্তেও মহোৎসব চলছে।
মিঠা-কড়া রোদে পুরোদমে মাড়াইয়ের পাশাপাশি শুকানো ও সেদ্ধ করার কর্মযজ্ঞের উচ্ছ্বাস চলছে ঘরে ঘরে।
নব উদ্দীপনায় আন্দোলিত হয়ে ওঠেছে কৃষাণ-কৃষাণীর জীবন। নতুন ধানে গৃহস্থের বাড়িতে পিঠাপুলির ঘ্রাণে সুরভিত বাতাসও। ভারতীয় উপ-মহাদেশের এক সময়ের বৃহত্তম জেলা ময়মনসিংহ খাদ্যশস্যের ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত।
বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা থাকায় কৃষকদেরও বিশেষ নজর ছিলো আমনে। সবমিলিয়ে প্রতিকূল পরিবেশ থাকায় চলতি বছর জেলায় আমনের আশাতীত ফলন হয়েছে। পাকা আমনের দানা বেশ পোক্ত। কাটার আগেও এই ধানগাছগুলোই দাঁড়িয়ে ছিলো মাথা উঁচু করে। ফলে কুয়াশামাখা ভোরেই মাঠে নামতে হচ্ছে কৃষককে। অগ্রহায়ণের শেষ দিকে ফসল কাটাও প্রায় শেষ। দলবেঁধে মাঠে ফসল কাটার পর শ্রমিকরা আঁটি বেঁধে মাথায় করে গৃহস্থের বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে। হেমন্তের শুরু থেকে এই চিত্রটিই চোখে পড়ে। এই ধানেই হবে পিঠা-পুলি, ফিরনি-পায়েস আরো কত কী! ক্ষেতের পাশে কিংবা বাড়ির উঠোনে পূর্ণোদ্যমে হাতেই চলছে মাড়াইয়ের কাজ। অনেক কৃষক ধান মাড়াইয়ে মেশিনের সাহায্যও নিচ্ছেন। মাড়াইয়ের পর রোদে শুকানোর কাজে কৃষাণীকে সহায়তা করছেন কৃষক। দিন-রাত পরিশ্রম করছেন তারা। বাম্পার ফলনের পর নতুন ধানের মন মাতানো সৌরভে চাঙ্গা তাদের জীবন। বসে থাকার সময় নেই গ্রামীণ বধূরও। অনাবিল হাসি নিয়ে বাতাসের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে কুলোয় করে ধানের ‘চুছা’ ছাড়ানোর কাজ করছেন। ধান শুকানো থেকে শুরু করে সেদ্ধ করার কাজ মূলত কৃষাণীরাই করেন। এরাই আবার প্রখর রোদে পায়ের পাতা ধানে ডুবিয়ে রোদে নাড়েন।
বাংলাদেশ সময়: ১১৫০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০৬, ২০১৮
এমএএএম/এএটি