তারপরও বিশ্বের কিছু জায়গায় গড়ে উঠেছে পোকামাকড়ের রেস্টুরেন্ট। এর মধ্যে অন্যতম কম্বোডিয়ার ‘বাগ ক্যাফে’।
দেশটির জনপ্রিয় পর্যটন এলাকা সিয়েম রিপে সম্প্রতি খোলা হয়েছে ব্যতিক্রমী রেস্টুরেন্টটি। উদ্ভট মেন্যুর কারণে সেখানে ক্রেতা বা দর্শনার্থীদের ভিড়ও থাকে সবসময়। অনেকেই আছেন খেতে না পারলেও অন্তত দেখার জন্য হলেও রেস্টুরেন্টটিতে যান।
দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশ কম্বোডিয়ায় পোকামাকড় খাওয়া নতুন কিছু নয়। তবে সেখানকার মানুষজন পোকামাকড় খায় সাধারণত ভাজি করে, সসে ডুবিয়ে নাহয় বিয়ারের সঙ্গে।
সেদিক থেকে বাগ ক্যাফের মেন্যু একেবারেই আলাদা। প্রচলিত অনেক খাবারের মধ্যেই পোকামাকড় মিশিয়ে তারা তৈরি করছে বাহারি সব মেন্যু। আর এই কাজে তারা ব্যবহার করছে মাকড়সা, শুঁয়োপোকা, বিচ্ছু, ঘাসফড়িং, মৌমাছি প্রভৃতি।
দেখতে তো বটেই, মেন্যুগুলোর নামও বেশ চটকদার। অ্যান্ট স্প্রিং রোল (পিঁপড়ার রোল), সিল্কওর্ম তারো ক্রোকেটস (শুঁয়োপোকা দিয়ে তৈরি), সুইট পটেটো ক্রিম উইথ বি লার্ভা (মৌমাছির কীট দিয়ে তৈরি), সিল্কওর্ম অ্যান্ড ম্যঙ্গো ফ্লামবে, ক্রিকেট চিজকেক ডেজার্ট (ঝিঁঝি পোকা দিয়ে তৈরি)।
এছাড়া বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে ‘বাগ ম্যাক’, যার মধ্যে একসঙ্গেই মিলবে রান্না করা পিঁপড়া, মৌমাছি, শুয়োপোকা, ঝিঁঝিঁ পোকা, সঙ্গে আছে স্লাইস করা চিজ ও আচার।
শুধু খাবারের মেন্যুই নয়, বাগ ক্যাফে বিশেষত্ব এনেছে পরিবেশনেও। রেস্টুরেন্টটির ওয়েটারদের গায়ে রয়েছে ‘আই হেট ইনসেক্টস’ (আমি পোকা ঘৃণা করি) লেখা টিশার্ট, যেখানে হেট-এর এইচ বর্ণটি লালদাগে কেটে দেওয়া। অর্থাৎ মূল লেখাটি দাঁড়ায় ‘আই এট ইনসেক্টস’ (আমি পোকা খেয়েছি)।
কম্বোডিয়ার বাগ ক্যাফেতে পোকামাকড়ের মেন্যুর জন্য প্রতিদিনই ভিড় করেন অসংখ্য পর্যটক। যুক্তরাজ্য, পোল্যান্ড, মালয়েশিয়া থেকেও ক্রেতা আসেন প্রচুর।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) হিসাবমতে, বিশ্বের অন্তত দুইশ’ কোটি মানুষ পোকামাকড় খায়। প্রোটিনের সস্তা উৎস হওয়ায় এটিকে গবাদিপশুর বিকল্পও ভাবছেন অনেকেই। তবে অতিরিক্ত হারে পোকামাকড় মারায় পরিবেশের ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে বলে মত বিশেষজ্ঞদের।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০১৯
একে