ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

মফস্বল সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মোনাজাতউদ্দিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮২৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯
মফস্বল সাংবাদিকতার পথিকৃৎ মোনাজাতউদ্দিন

ফেনী: বাংলাদেশের মফস্বল সাংবাদিকতা জগতের পথিকৃৎ ছিলেন মোনাজাতউদ্দিন। তার ২৪তম মৃত্যুবার্ষিকী রোববার (২৯ ডিসেম্বর)। ১৯৯৫ সালের এই দিনে তিনি না ফেরার দেশে চলে যান। সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে দুর্ঘটনায় মারা যান এই চারণ সাংবাদিক।

যমুনা নদীর বাহাদুরাবাদগামী রেলওয়ের শেরেবাংলা ফেরি থেকে কালসোনার ড্রেজিং পয়েন্টের ছবি তুলতে গিয়ে আকস্মিকভাবে পানিতে পড়ে ডুবে মারা যান।

১৯৪৫ সালের ১৮ জানুয়ারি রংপুর শহরের কেরাণীপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন মোনাজাতউদ্দিন।

উত্তর জনপদের অত্যন্ত সৎ, নিষ্ঠাবান, সাহসী শ্রমনিষ্ঠ এবং নিবেদিতপ্রাণ সাংবাদিক মোনাজাতউদ্দিন।

মোনাজাতউদ্দিন বাংলাদেশের গ্রামীণ সাংবাদিকতা জগতের একটি সুপরিচিতি নাম। একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র। ৩০ বছরের সাংবাদিকতা জীবনে তিনি নিজের সুখ-দুঃখের কথা ভুলে গিয়ে মানুষের কথা লিখেছেন। গ্রাম থেকে গ্রামে ছুটে চলেছেন সংবাদ সংগ্রহে। গ্রামীণ মানুষের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না, চাওয়া-পাওয়া, অভাব-অনটন সবকিছুই তুলে নিয়ে এসেছেন। নিষ্ঠার সাথে ছেপেছেন সংবাদপত্রে।

খবরের পেছনে থাকে আরও খবর। থাকে জানা-অজানা নানা কথা ও কাহিনী। এর জন্য তিনি চষে বেড়িয়েছেন মাঠের পর মাঠ, গ্রাম থেকে গ্রামান্তরে। গেছেন শেকড়ের সন্ধানে। সৃষ্টি করেছেন এক নতুন দিগন্ত। বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের জনজীবনের সমস্যা-সম্ভাবনা ও মানবিক অনুভবের নানা দিক তিনি অণুবীক্ষণ পর্যালোচনার মাধ্যমে শক্তিশালী লেখনীতে ধারণ করেছেন। প্রতিটি প্রতিবেদনে ফুটে উঠেছে গ্রাম বাংলার অকৃত্রিম চিত্র।

১৯৬৬ সালে সর্বপ্রথম দৈনিক আজাদ পত্রিকায় রংপুরের নিজস্ব সংবাদদাতা হিসেবে সাংবাদিকতা জীবন শুরু করেন। এরপর নিজের প্রকাশনায় দৈনিক রংপুর প্রকাশিত হয়। কাজ করেন পূর্বদেশ পত্রিকাতেও। ১৯৭৬ সালে যোগ দেন দৈনিক সংবাদে। সেখানে তিনি টানা ২০ বছর কাজ করেন। এ সময়েই ছড়িয়ে পড়ে মোনাজাতউদ্দিন নাম। ১৯৯৫ সালের ২৪ এপ্রিল সংবাদ ছেড়ে তিনি দৈনিক জনকণ্ঠে যোগ দেন। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি এখানেই কাজ করেছেন।

মোনাজাতউদ্দিন কেবল একজন সাংবাদিকই ছিলেন না, সাহিত্যের প্রায় সব শাখাতেই তার দখল ছিল। তিনি রচনা করেন একাধিক ছোট গল্প, নাটক, ছড়া ও প্রবন্ধ। তার উল্লেখযোগ্য প্রকাশিত গ্রন্থগুলো হলো- ‘পায়রাবন্দের শিকড় সংবাদ’, ‘সংবাদ নেপথ্যে’, ‘পথ থেকে পথে’, ‘কানসোনার মুখ’, ‘নিজস্ব রিপোর্ট’, ‘ছোট ছোট গল্প’, ‘চিলমারীর একযুগ’, ‘শাহাআলম ও মজিবরের কাহিনী’, ‘অনুসন্ধানী প্রতিবেদন’, ‘কাগজের মানুষেরা’ ও ‘নয়-নারী’।

বাংলাদেশ সময়: ০৩২২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৯
এসইচডি/টিএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।