ঢাকা, রবিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

আগুন উৎসব ‘ভারাবুরা’

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৮ ঘণ্টা, মার্চ ৩, ২০২০
আগুন উৎসব ‘ভারাবুরা’

বাঙালি মানসের পরিচয় তার ঐতিহ্যের মধ্যেই। ১৯৫২ সাল থেকে বাঙালির মাঝে যে সাংস্কৃতিক চেতনা জাগ্রত হয়, তখন থেকে শুরু করে অদ্যাবধি ঐতিহ্যের মাঝে তারা নিজেদের প্রতিকৃতির সন্ধান করেছে। 

বাংলাদেশের অন্যতম জেলা টাঙ্গাইল ঐতিহ্যিক সংস্কৃতিতে সমৃদ্ধ। এ অঞ্চল বহু  অতীত ঐতিহ্য আর বাংলার চির পরিচিত লোকসংস্কৃতির ইতিহাসের ক্রমধারার উত্তরাধিকারী।

প্রাচীন ইতিহাস আর লোকসংস্কৃতির ঐতিহ্যে টাঙ্গাইল জেলার অবস্থান উঁচুতে।

এখানকার বহু ঐতিহ্যের মধ্যে ‘ভারাবুরা’ বহুল প্রচলিত উৎসব। ‘ভারাবুরা’ টাঙ্গাইল অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী উৎসব। সাধারণত ছোট ছোট ছেলেরা এ উৎসব পালন করে।

প্রতিবছর কর্তিক মাসের শেষ সন্ধ্যায় ভারাবুরা’য় মেতে উঠে ওই অঞ্চলের ছোট ছোট ছেলেরা। এটি মূলত গ্রামের ছেলেদের আগুন উৎসব। যা অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রামের ছেলেরা উদযাপন করে থাকে।  

 ‘ভারাবুরা’ উৎসবে কিশোরেরা।  স্থানীয়দের বিশ্বাস, ভারাবুরার মাধ্যমে মশা মরে শেষ হয়ে যাবে। উৎসবের প্রধান উপকরণ আগুন এবং পাটশোলা। পাটশোলার শীর্ষে আগুন জ্বেলে সন্ধ্যায় আনন্দ চিৎকারে ছুটোছুটি করতে করতে গ্রামের ছেলেরা বলতে থাকে-

                  ‘ভারা গেলো
                  বুরা পেলো 
                  মশা মইরা সব
                  শ্যাষ হইলো। ’

এ আগুন উৎসবের দৃশ্য মনোমুগ্ধকর ও আনন্দদায়ক। অনেক দূর থেকে এমন দৃশ্য দেখতে মনে হয় বহু জোনাকি একসঙ্গে রয়েছে। আবার এমনও মনে হয় যেন আকাশের জ্বলজ্বলে নক্ষত্র গ্রামের পালানে, আলপথে, মেঠোপথে নেমে এসেছে।  

কার্তিক মাসের সন্ধ্যায় ভারাবুরার দৃশ্য এ অঞ্চলের ছড়ায়ও ফুটে উঠেছে-

           ‘ভারাবুরা কাড়াকাড়ি 
           হারাহারির মাস
           আলোক ধুয়ায় নষ্ট হয়ে
           যায় মশকের বাস। ’

এ উৎসবের উদ্ভব কখন, কীভাবে হয়েছে সেটা সুনির্দিষ্ট করে জানা যায়নি। কতদিন আগে থেকে প্রচলিত তাও বলা যায় না। তবে বলা যায়, টাঙ্গাইল অঞ্চলের মানুষের সাংস্কৃতিক জীবনে ঐতিহ্যবাহী এ উৎসবের আজও গুরুত্ব রয়েছে।

লেখক: সহকারী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১০১ ঘণ্টা, মার্চ ০৩, ২০২০
এমএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।