শহরের মহাসড়কগুলোতে তাকালে এখন যতদূর দৃষ্টি যায়, শুধু জনশূন্যতা। রাস্তায় নেই কোনো মানুষ বা যানবাহন।
মানুষের ঘরবন্দির এই সুযোগটিকে কাজে লাগিয়ে নগরের প্রকৃতি যেন মেলে ধরেছে নিজেদের। ফাঁকা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, রাজধানী সেজেছে নানা রং-রূপে। দূষণহীন নগরীর আনাচে-কানাচে উঁকি দিচ্ছে গ্রীষ্মের নানা রঙের ফুল। একইসঙ্গে পাখিদের কিচিরমিচিরও প্রকৃতিতে প্রাণ ফেরার কথাই জানান দিচ্ছে।
ধুলাবালির আবরণ না থাকায় এখন যেন নগরীর সড়কের পাশের বিভিন্ন ফুলের সৌন্দর্য অন্য সময়ের থেকে অনেকটাই বেশি। কিন্তু সেই সৌন্দর্য দেখবার যেন কেউ নেই। একটা সময় বিভিন্ন মৌসুমের ফুলের সঙ্গে ছবি তুলতে মানুষের যে ভিড় থাকতো বিভিন্ন স্পটে, তার বিন্দুমাত্র নেই এখন।
মঙ্গলবার (২৬ মে) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, ঈদের দ্বিতীয় দিনে রাজধানী অনেকটাই ফাঁকা। করোনার মধ্যে এবারের ঈদ হওয়ায় শহরের বেশির ভাগ মানুষই দিনের প্রথম অংশে ঘর থেকে বের হয়নি।
ঈদের সময় রাজধানীর রাস্তাঘাট এমনিতেই ফাঁকা দেখা যায়। স্বাভাবিক অবস্থার মতো থাকে না যানজট। তবে করোনার প্রভাবে রাস্তাঘাট এবার আরও বেশি ফাঁকা।
স্বাভাবিক সময়ে নগরবাসী ঈদের পরদিন আত্মীয়-স্বজনের বাসায় বেড়াতে যেতেন। কেউবা পার্ক বা বিনোদন কেন্দ্রে যেতেন। কিন্তু করোনা সে পরিস্থিতি পাল্টে দিয়েছে। এবার নিজ বাসায় শুধু পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেই ঈদ উদযাপন করেছে রাজধানীবাসী।
রাজধানীর ভিআইপি রোডে বিনা বাধায় চলাচল করছে রিকশা, বাইসাইকেল। ছুটিতে কিছুটা বিশ্রাম পেয়ে যেন রাজপথও স্বল্পসংখ্যক যানবাহনের চালককে দিয়েছে ইচ্ছেমত চলার স্বাধীনতা। যাত্রী কম থাকলেও নির্ঝঞ্ঝাট রাস্তায় গাড়ি চালিয়ে আরাম পাচ্ছেন চালকরা।
লকডাউন ও ঈদের আমেজে রাজধানীর অধিকাংশ দোকানেই তালা ঝুলতে দেখা গেছে। সাধারণ যানবাহন বন্ধ থাকায় গাড়ির চাপ ও সিগন্যালের কড়াকড়ি না থাকার ফলে রাস্তা পারের অবাধ সুখ নাগরিকের মনে। বাস্তবে সম্ভব না হলেও মাঝে মাঝেই ঢাকাকে এমন ফাঁকা দেখতে চান নগরবাসী।
একুশ শতকের প্রথম মহামারি করোনা এসে বদলে দিয়েছে রাজধানীর দৃশ্যপট। সংক্রমণ থেকে বাঁচতে অনেকেই ঢাকাকে একা ফেলে গ্রামে চলে গেছেন। আর যারা শহরে আছেন, তারাও স্বেচ্ছায় ঘরবন্দি। আর সে সুযোগেই দূষণ কমে ঢাকার বাতাসের মান এখন গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৪ ঘণ্টা, মে ২৬, ২০২০
এইচএমএস/টিএ