ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ফিচার

নগরে গ্রামীণ পিঠার স্বাদ

ফিচার রিপোর্টার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৫৪ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৬, ২০২২
নগরে গ্রামীণ পিঠার স্বাদ জাতীয় পিঠা উৎসবের স্টলগুলো রয়েছে বাহারি নকশার পিঠা | ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: শীতকাল এলেই বাঙালির মনে উঁকি দেয় পিঠার কথা। পিঠা ছাড়া বাঙালির শীত যেন পরিপূর্ণ হয় না।

সেই শীতের পিঠার জমজমাট আড্ডা বসেছে রাজধানীর শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণে।

পুলি পিঠা, পাতা পিঠা, পাটিসাপটা, পাকান পিঠা, নারকেলের সেদ্ধ পুলি, নারকেল জিলাপি, তেলের পিঠাসহ বাহারি নকশি পিঠায় ভরে উঠেছে একাডেমি প্রাঙ্গণের স্টলগুলো। সেখানে ভিড়ও জমেছে বেশ।

বৃহস্পতিবার (৬ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় এই পিঠা উৎসব ঘুরে দেখা যায়, উদ্যোক্তারা স্টলে তাদের হাতে তৈরি পিঠার পসরা সাজিয়েছেন। স্টলের সামনে ভোজনরসিকরা ভিড় করেছেন পিঠার স্বাদ নিতে। কেউ কেউ পরিবারের অন্য সদস্যদের জন্যও কিনে নিয়ে যাচ্ছেন পিঠা। এসব পিঠার স্বাদেও রয়েছে ভিন্নতা।



কথা হয় ‘মৃদুলা’ স্টলের বেশ কয়েকজন উদ্যোক্তার সঙ্গে। তারা জানান, দুধপুলি, দুধ চিতই ও বিবিখানা পিঠার কেউ স্বাদ না নিলে তার বাঙালি জীবনই বৃথা। মুখরোচক এসব পিঠার প্রকৃত স্বাদ পেতে হলে খেতে হবে এই শীত মৌসুমেই।

আরেক স্টলে পিঠার পসরা সাজিয়ে বসা মেহেরুন নাহার জানান, ভিন্ন ভিন্ন জেলার জনপ্রিয় পিঠা তৈরি তার শখ। এমন প্রায় ২০ রকমের পিঠা তৈরি করেছেন তিনি। গ্রামীণ আবহে ছোট্ট টেবিলে সজ্জিত পিঠাগুলোর মধ্যে আকর্ষণীয় হলো—নারিকেল পাকোয়ান, বকুল পিঠা, মুগ পাকোয়ান, মালটা মালাই ও লবঙ্গলতিকা।

উৎসব ঘুরে দেখা যায়, পিঠার স্টলগুলো জমেছে বেশ। বন্ধু-স্বজনদের নিয়ে অনেকেই এসেছেন গ্রামবাংলার পিঠার স্বাদ নিতে। বেশির ভাগ মানুষেরই আগ্রহের পিঠা ছিল মিষ্টি জাতীয়। তবে ঝাল-টক পিঠাতেও ছিল না অরুচি। উৎসবের ৫০টি স্টলে প্রায় ২০০ পদের পিঠা নিয়ে হাজির হয়েছেন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের পিঠাশিল্পীরা।



উৎসবে ঘুরতে আসে পিঠাপ্রেমী আমিনুর রহমান বলেন, দেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির অন্যতম উপাদান গ্রামীণ সংস্কৃতির পিঠাপুলি। নাগরিক জীবনে যখন সবকিছু যান্ত্রিকতায় আবদ্ধ হয়ে পড়ছে, সীমিত হয়ে পড়ছে আমাদের মানবিক বোধ, তখন আমাদের সেই গ্রামীণ সংস্কৃতির অনন্য স্বাদ নিয়ে হাজির পিঠা উৎসব। তাই এখানে পিঠা খেতে আসা।

আরশী নামে আরেক পিঠাপ্রেমী বলেন, এখানে এসে নতুন নতুন অনেক পিঠার সাথে পরিচিত হতে পারছি। ফুল পিঠা, বিবিয়ানা পিঠা, সেমাই পিঠা, নকশি পিঠা, নারকেল পিঠা, নারকেলের ভাজা পুলি, দুধরাজ, ফুলঝুরি পিঠাসহ আরও বাহারি সব নামের পিঠা দেখলাম। অনেকগুলো খেয়েছি। সেগুলোর স্বাদও অনেক মজাদার। বাড়ির জন্যও কিছু নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা আছে।



এদিকে সবাই যখন পিঠা খাওয়ায় ব্যস্ত, ঠিক সে সময় উন্মুক্ত মঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। এর মধ্যে নৃত্য, সঙ্গীত, আবৃত্তি অন্যতম। গান-কবিতার ছন্দের সাথে পিঠার স্বাদে বিভোর হয়েই উৎসবস্থল ত্যাগ করেছেন সবাই।

বুধবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে শিল্পকলা একাডেমির কফি হাউজের মুক্তমঞ্চ থেকে নানা রঙের বেলুন ও শান্তির প্রতীক পায়রা উড়িয়ে দশদিনের এই পিঠা উৎসবের উদ্বোধন করেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৬, ২০২২
এইচএমএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।