ঢাকা, শুক্রবার, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ১৬ মে ২০২৫, ১৮ জিলকদ ১৪৪৬

ফিচার

‘নররাক্ষসের’ সঙ্গে কিছুক্ষণ!

রক্তিম দাশ কলকাতা করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১:৩৭, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১০
‘নররাক্ষসের’ সঙ্গে কিছুক্ষণ!

অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি।
রোজ গোটা দশেক জ্যান্ত মুরগি আর বেশ পরিমাণে কাঁচা শাকসবজি খেয়ে চলেছেনে স্রেফ বাঁচার তাগিদে।

পয়সা উপার্জনের জন্য বেছে নিয়েছেন এই বিচিত্র জীবিকা শঙ্কর।

পুরো নাম শঙ্কর রাজভড়। আদি নিবাস ভারতের উত্তরপ্রদেশের বেনারসে। বছর ২২-এর এ যুবক এখন পশ্চিমবাংলায় ‘নররাক্ষস’-এর খেলা দেখিয়ে বেড়ান। হাওড়া জেলার বাকড়ায় গিয়ে দেখা মিলল এই নররাসের সঙ্গে।

বাকড়ার একটি মেলার এখন অন্যতম আকর্ষণ শঙ্কর রাজভড় ওরফে নররাক্ষস। গায়ের রঙ ঘোর কালো। মাথায় বড় বড় চুল। কপালে লাল কাপড়ের ফেট্টি। তাঁবুর ভেতরে চেন দিয়ে বাঁধা দুটি পা। একের পর এক জ্যান্ত মুরগি খেয়ে চলছেন তিনি। গোটা মুখ রক্তাক্ত। রোজ দশটি মুরগি তার খাদ্য। শুধু এটাই নয়, তার খাদ্যের তালিকায় আরও রয়েছে একটি রুই মাছ, ধানের কুঁড়ো, খড়, ডিমের খোসা, টিউব লাইটের কাচ, ঘাস, কুমড়ো, লাউ এমনকি ইট পর্যন্ত!

দেখা গেল, রোমহর্ষক এই প্রর্দশনীতে নকল রাসক্ষকে দেখে শিশুরা অনেকেই ভয়ে বাবা-মার কোলে কেঁদে ওঠছে। মাঝেমধ্যে আঁতকে উঠছেন অভিভাবকরাও।

খেলা শেষে ১০ মিনিটের বিরতি। বাংলানিউজের মুখোমুখি নররাক্ষস। বললেন, দশ বছর ধরে এই খেলা দেখাচ্ছি। বাবা বেকার। সংসার চালতে বাধ্য হয়ে এই জীবিকা বেছে নিয়েছি।

চোখের কোণে জল, একটা চাকরি দিতে পারেন? আর ভালো লাগে না। নররাক্ষসের ভিতর থেকে বেরিয়ে এসে বললেন মানুষ শঙ্কর।

কীভাবে এলেন? বললেন, হুগলীর বেগমপুরে মহাদেব মাজি বলে একজন দেখাতেন। তাকে দেখেই শুরু। প্রথমে এসব খেলে পেটে যন্ত্রণা হতো। এখন অভ্যাস হয়ে গেছে। জানেন, রোজ প্রর্দশনীতে এসব খেয়ে দিনে-রাতে আর স্বাভাবিক খাবার খেতে পারি না।

প্রর্দশনীর ঘণ্টা বাজল। ‘যাই’ বলে উঠে পড়লেন নররাক্ষসরুপী শঙ্কর। মেলার মাইকে তখন বাজছে, ‘মানুষ নয় গো, নররাক্ষস দেখে যাও। এ সুযোগ আর পাবে না...’।

বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ২১০০, সেপ্টেম্বর ২৬, ২০১০   

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।