ইতিহাদ স্টেডিয়ামে শুক্রবার রাতে শেষ বাঁশির পর যখন ভেসে আসছিল ‘সেভেন নেশন আর্মি’-র সুর, তখন গ্যালারির হাজারো কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছিল একটাই নাম—কেভিন ডি ব্রুইনা।
দশ বছরের এক রাজকীয় অধ্যায়ের পর ম্যানচেস্টার সিটির জার্সি গায়ে আর দেখা যাবে না এই বেলজিয়ান জাদুকরকে।
তবে বিদায় জানাবার আগেই যেন মনে করিয়ে দিলেন—"আমি এখনও খেলতে পারি। "
মাঠে ফিরেই গোল
৩৩ বছর বয়সী মিডফিল্ডার উলভসের বিপক্ষে ১-০ গোলের জয়ে একমাত্র গোলটি করেন, যা হতে পারে সিটির জন্য আগামী মৌসুমের ইউরোপীয় সম্ভাবনার চাবিকাঠি।
ম্যাচ শেষে ডি ব্রুইনার কণ্ঠে খানিক অভিমান, খানিক আত্মবিশ্বাস—"আমি জানি না ভবিষ্যতে কী আছে। তবে আমি প্রমাণ করেছি—আমি এখনও পারি। গত কয়েক সপ্তাহে যা করেছি, তা কিছু নয়। আমি শুধু আমার সেরা খেলাটা খেলতে চেয়েছি। "
বিদায়ের ক্ষণ, গর্বের প্রাপ্তি
এক সময়ের গোল-অ্যাসিস্টের কারিগর এখন একটু ক্লান্ত, কিছুটা ক্ষয়িষ্ণু। কিন্তু শৈল্পিকতা এখনো অটুট। জেরেমি ডোকুর ক্রস থেকে প্রথম ছোঁয়ায় নিখুঁত ফিনিশে প্রমাণ করলেন—সোনার ছোঁয়া এখনও রয়ে গেছে পায়ে।
সিটির হয়ে ডি ব্রুইনার শেষ হোম ম্যাচ ২০ মে, বোনমাউথের বিপক্ষে। এরপর অ্যাওয়ে ম্যাচ ও ২৫ মে এফএ কাপ ফাইনাল—ফুটবলের এক যুগের উপসংহার হতে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।
গার্দিওলার শ্রদ্ধা: "শুধু ধন্যবাদ"
পেপ গার্দিওলার কণ্ঠেও ছিল আবেগ: "শুধু একটা কথাই বলব—ধন্যবাদ। এমন খেলোয়াড়কে প্রতিস্থাপন করা যায় না। কেভিন শুধু মাঠের নয়, ক্লাবের আত্মার অংশ হয়ে আছে। আমাদের যে সাফল্য, তার অনেকটাই তার কারণে সম্ভব হয়েছে। "
পরিসংখ্যানে কিংবদন্তি ডি ব্রুইনা
৯ মৌসুমে: ৯২ গোল ও ১৫৮ অ্যাসিস্ট
গার্দিওলার অধীনে ২৫০ গোলের সম্পৃক্ততায় লিওনেল মেসির পর দ্বিতীয়
৩০ বছর বয়সের পর ৩০টি প্রিমিয়ার লিগ গোল (সিটির ইতিহাসে আগুয়েরো ও ইয়াইয়া তোরের পরেই)
উলভসের বিপক্ষে: ১১ ম্যাচে ৬ গোল ও ৫ অ্যাসিস্ট
‘আরও এক বছর’
সাবেক সিটি ডিফেন্ডার মিকাহ রিচার্ডস বলেন, "সে এখনও টপ লেভেলে খেলার মতো ফিট। তার ফুটবল মস্তিষ্ক অটুট। আমি বলি—আরও এক বছর দাও। " সাবেক লিভারপুল তারকা জেমি ক্যারাগার তো বলেই দিলেন: "আমার চোখে কেভিন ডি ব্রুইনাই ম্যানসিটির সর্বকালের সেরা ফুটবলার। তার একটা মূর্তি হওয়া উচিত। "
এমএইচএম