দিয়েগো ম্যারাডোনার নাপোলির সেই স্বর্ণযুগ যেন আবার ফিরে এসেছে। ১৯৮৭, ১৯৯০, ২০২৩-এর পর এবার ২০২৪-২৫ মৌসুমে নাপোলি জিতল তাদের ইতিহাসের চতুর্থ স্কুডেট্টো, দ্বিতীয়বার ম্যারাডোনাকে ছাড়া।
এই সাফল্য শুধু ট্রফির সংখ্যায় নয়, বরং ইতালিয়ান ফুটবলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রত্যাবর্তনের ঘটনা। মাত্র এক মৌসুম আগেও তারা ছিল দশম স্থানে—তিন কোচ বদল, দল ছিন্নভিন্ন—আর আজ তারা ইতালির শিরোপা জয়ে শীর্ষে।
কন্তের স্পর্শে পুনর্জন্ম
আন্তোনিও কন্তে যে ‘পুনর্জাগরণের রূপকার’, সেটা আবারও প্রমাণ করলেন। জুভেন্টাস, চেলসি, ইন্টার মিলানের পর এবার ভাঙা নাপোলিকে চ্যাম্পিয়ন বানালেন তিনি। মৌসুমের শুরুতে লক্ষ্য ছিল শুধুই শীর্ষ চারে ফেরা, অর্থাৎ চ্যাম্পিয়নস লিগে খেলা নিশ্চিত করা। কিন্তু কন্তে এখানেই থামেননি।
নায়ক স্কট ম্যাকটমিনে
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের সমর্থকেরা হয়তো এখন আফসোসে মাথা কুটছেন। গত গ্রীষ্মে মাত্র ৩০ মিলিয়ন ইউরোয় বিক্রি করা স্কট ম্যাকটমিনেই এখন সিরি আ-এর সেরা খেলোয়াড়।
১২ গোল ও ৬ অ্যাসিস্ট করে মিডফিল্ড থেকে নাপোলিকে টেনে তুলেছেন এই স্কটিশ তারকা। ফেব্রুয়ারির পর থেকে ৬ গোল ও ২ অ্যাসিস্টে শেষ দিকে শিরোপা রেসে ইন্টারকে চাপে রাখেন তিনি। তার নেপথ্য নৈপুণ্যেই কন্তের দল দৌড়ে এগিয়ে থাকে।
বড় তারকারা নেই... তবুও শিরোপা
এই নাপোলি দলে নেই গত মৌসুমের অনেক তারকা। মিন জে কিম (বায়ার্ন), ওসিমেন (গালাতাসারে), জিয়েলিনস্কি (ইন্টার), খভিচা কভারাতসখেলিয়া (পিএসজি)—সবাই চলে গেছেন। তারপরও ইন্টারকে পেছনে ফেলে ৩৮ ম্যাচে সবচেয়ে ধারাবাহিক দল হিসেবে চ্যাম্পিয়ন হলো নাপোলি।
আবারও লুকাকুর রূপান্তর
রোমেলু লুকাকুর ক্যারিয়ারে আবারও নতুন জীবন এনে দিলেন কন্তে। ১৪ গোল ও ১০ অ্যাসিস্ট—শুধু গোল নয়, গোটা দলের আক্রমণভাগই ঘুরেছে তার চারপাশে। ইন্টারে ২০২০-২১ মৌসুমেও তাকে নায়ক বানিয়েছিলেন কন্তে, এবারও পুরোনো সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন বেলজিয়ান তারকা।
কন্তের ভাষায়—‘এটা এক বিস্ময়কর কীর্তি’
"যে জিতবে, ইতিহাস লিখবে—আর সবাই তা পড়বে। দ্বিতীয় হলে কেউই মনে রাখবে না," — কয়েক দিন আগেই বলেছিলেন কন্তে।
এখন তিনি লিখছেন সেই ইতিহাস।
এমএইচএম