ফিলিস্তিনের ফুটবল অঙ্গনে আরও এক দুঃসংবাদ। ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় প্রাণ হারালেন গাজাভিত্তিক ক্লাব খাদামাত আল-মাগাজির তারকা ফুটবলার মুহান্নাদ আল-লি।
ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, গত সোমবার মাগাজি শরণার্থী শিবিরে নিজ বাড়িতে ড্রোন হামলায় গুরুতর আহত হন মুহান্নাদ। সেসময় তিনি বাড়ির তৃতীয় তলায় ঘুমাচ্ছিলেন। ড্রোন থেকে ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্র তার মাথায় সরাসরি আঘাত করে, এতে মারাত্মক রক্তক্ষরণ ও মস্তিষ্কে চোট লাগে। কয়েকদিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে অবশেষে বৃহস্পতিবার সকালে প্রাণ হারান মাত্র ২০-এর ঘরে থাকা এই প্রতিভাবান ফুটবলার।
নিজ ক্লাব খাদামাত আল-মাগাজিতেই ফুটবল যাত্রা শুরু করেছিলেন মুহান্নাদ। ২০১৬–১৭ মৌসুমে ক্লাবটির প্রিমিয়ার লিগে উন্নীত হওয়ার পথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন তিনি। এরপর খেলেছেন শাবাব জাবালিয়ায়, ২০১৮–১৯ মৌসুমে দলকে এনে দেন রানার্সআপ ট্রফি। কিছুদিন ছিলেন গাজা স্পোর্টস ক্লাবেও। হাঁটুর চোটে পড়ায় খেলায় কিছুটা বিরতি নিলেও পরবর্তীতে ফিরে যান নিজের প্রথম ক্লাব খাদামাত আল-মাগাজিতে।
সবকিছু ছাপিয়ে মুহান্নাদের জীবনে ছিল আরও এক স্বপ্ন; স্ত্রী ও সদ্যজাত সন্তানের মুখ দেখা। গাজায় যুদ্ধ শুরু হওয়ার কিছুদিন আগেই তার স্ত্রী কর্মসূত্রে পাড়ি জমান নরওয়েতে। মুহান্নাদ গাজার অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে কোনোভাবেই বেরিয়ে যেতে পারেননি। সন্তানের জন্মের খবর পেয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু কোলে নেওয়া তো দূরের কথা, চোখেও আর দেখা হয়নি তার সেই মুখ।
ফিলিস্তিনি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য বলছে, ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত নিহত হয়েছেন অন্তত ৫৮৫ জন ক্রীড়াবিদ। যাদের মধ্যে ২৬৫ জন ছিলেন ফুটবল সংশ্লিষ্ট। মুহান্নাদের মৃত্যু সেই হৃদয়বিদারক তালিকাকে আরও দীর্ঘ করল।
একজন ফুটবলারের প্রাণ কেড়ে নেওয়া এই হামলা যেন কেবল একজন খেলোয়াড় নয়। একজন স্বামী, পিতা, স্বপ্ন দেখা তরুণকেই হত্যা করল। যুদ্ধ থামেনি, থেমে গেলো শুধু একটি প্রতিভাবান হৃদয়ের স্পন্দন।
আরইউ