ঢাকা, রবিবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩২, ০৬ জুলাই ২০২৫, ১০ মহররম ১৪৪৭

ফুটবল

এক অপারেশনই বদলে দিল সব, সড়কপথেই চিরবিদায় জোতার

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫:১৫, জুলাই ৪, ২০২৫
এক অপারেশনই বদলে দিল সব, সড়কপথেই চিরবিদায় জোতার ছবি: সংগৃহীত

মাত্র দিন দশেক আগে দীর্ঘদিনের প্রেমিকা রুতে কারদাসোর সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন লিভারপুল ও পর্তুগাল জাতীয় দলের ফরোয়ার্ড দিয়াগো জোতা। সদ্যসমাপ্ত মৌসুমেও ক্লাব ও দেশের হয়ে পেয়েছেন দুটি গুরুত্বপূর্ণ শিরোপাও।

জিতেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ ও উয়েফা নেশন্স লিগ। জীবনের অন্যতম সোনালি অধ্যায় যেন তখনই শুরু হচ্ছিল। কিন্তু সব আনন্দ মুহূর্তেই থমকে গেল এক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনায়।

স্পেনের জামোরা প্রদেশে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান ২৮ বছর বয়সী জোতা এবং তার ভাই আন্দ্রে সিলভা। ২৬ বছর বয়সী সিলভাও ছিলেন পেশাদার ফুটবলার। খেলতেন পর্তুগালের দ্বিতীয় স্তরের একটি ক্লাবে।

তবে এই দুর্ঘটনার পেছনে একটি মানবিক সিদ্ধান্তের গভীর ট্র্যাজেডি রয়েছে। সাম্প্রতিক সময়ে ফুসফুসে অস্ত্রোপচারের পর চিকিৎসকেরা জোতাকে বিমানে ভ্রমণ করতে নিষেধ করেছিলেন। বিমানের অভ্যন্তরীণ চাপ তার স্বাস্থ্যের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারত। সে কারণে সড়ক ও ফেরিপথেই ইংল্যান্ডের উদ্দেশে রওনা দিয়েছিলেন দুই ভাই।

স্প্যানিশ সংবাদমাধ্যম ও সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, জামোরা হয়ে উত্তরের সান্তান্দার বন্দরের দিকে যাচ্ছিলেন তারা। সেখান থেকে ফেরিতে চড়ে ইংল্যান্ডের পোর্টসমাউথে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। চিকিৎসকের পরামর্শে বিমানের পরিবর্তে সড়কপথকেই নিরাপদ মনে করেছিলেন জোতা।

কিন্তু সেই নিরাপদ ভ্রমণই পরিণত হলো মর্মান্তিক এক ট্র্যাজেডিতে। স্থানীয় সময় রাত ১২টা ৪০ মিনিটের দিকে জামোরা প্রদেশের সানাব্রিয়া অঞ্চলের এ-৫২ মহাসড়কে ভয়াবহ দুর্ঘটনার শিকার হয় তাদের ল্যাম্বরগিনি গাড়িটি। বেনাভেন্তে শহরের দিকে যাওয়ার সময় গাড়ির একটি চাকা বিস্ফোরিত হলে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেটি রাস্তা থেকে ছিটকে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে পাশের গাছপালায়।

ঘটনাস্থলে পৌঁছায় জরুরি সেবাদাতা সংস্থাগুলো, কিন্তু ততক্ষণে সব শেষ। আগুনে পুড়ে যাওয়া গাড়ি থেকে প্রথমে নিহতদের পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। পরে গাড়ির নম্বরপ্লেটের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় প্রাণ হারিয়েছেন দিয়াগো জোতা ও তার ভাই আন্দ্রে সিলভা।

পর্তুগিজ গণমাধ্যম সিএমটিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাংবাদিক ভিক্টর পিন্টো বলেন, ‘জোতা মাঝে মাঝে গাড়িতে ভ্রমণ করতেন, কারণ তার ফুসফুসে হালকা সমস্যা ছিল। দক্ষিণ ইংল্যান্ড ও স্পেনের মধ্যে একটি ফেরি সংযোগ রয়েছে, সেখান দিয়েই যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল তারা। ’

জোতার মৃত্যুর খবরে শোকের ছায়া নেমে এসেছে ফুটবল অঙ্গনে। পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন, লিভারপুল, সাবেক ও বর্তমান সতীর্থরা সবাই সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছেন নিজেদের শোক।  

আরইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।