বাংলাদেশ নারী ফুটবল দলের ব্যস্ত সূচি যেন থামছেই না। মিয়ানমারে এএফসি নারী এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের কঠিন লড়াই শেষে দেশে ফিরেই দল খেলেছে ঘরের মাঠে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ চ্যাম্পিয়নশিপ।
আজ বিকেলে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কনফারেন্স রুমে এই টুর্নামেন্টকে ঘিরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের অধিনায়ক আফিদা খন্দকার বলেন, ‘আমরা ভালো খেলে মূল পর্বে জায়গা করে নিতে চাই। টানা খেলার মধ্যে থাকলেও ক্লান্তি নেই। সাফে আমরা সবাই গেম টাইম পেয়েছি, আর এশিয়ান কাপ বাছাইয়ের পর কিছুটা বিশ্রামও মিলেছে। ’
বাংলাদেশের জন্য গ্রুপটি সহজ নয়। প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া, স্বাগতিক লাওস এবং তিমুর লেস্তে। দক্ষিণ কোরিয়া এশিয়ার অন্যতম সেরা নারী দল, যারা ফিফা র্যাংকিংয়েও অনেক এগিয়ে। লাওসও শক্তিশালী দল এবং নিজেদের মাঠে খেলায় আরও বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। তবে তিমুর লেস্তেকে তুলনামূলকভাবে সহজ প্রতিপক্ষ হিসেবে দেখছে বাংলাদেশ।
বাছাই পর্বে মোট আটটি গ্রুপে খেলা হবে। প্রতিটি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন এবং সেরা তিন রানার্সআপ দল থাইল্যান্ডে অনুষ্ঠিতব্য মূল পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। বাংলাদেশের ব্রিটিশ কোচ পিটার বাটলার বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়া এই অঞ্চলের অন্যতম শক্তিশালী দল। তাই আমরা মূলত রানার্সআপ হিসেবে জায়গা করে নেওয়ার লক্ষ্যেই নামব। তবে আমাদের প্রথম ম্যাচটি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। লাওসের বিপক্ষে জয় আমাদের অনেকটা এগিয়ে দেবে। ’
এই দলের একটি বড় ইতিবাচক দিক হলো, ২৩ সদস্যের স্কোয়াডটি প্রায় একই রয়েছে সাফ অনূর্ধ্ব-২০ টুর্নামেন্টে খেলা দলের মতো। এর মধ্যে রয়েছেন নয়জন ফুটবলার যারা জাতীয় দলের সদস্য এবং সম্প্রতি এএফসি নারী এশিয়ান কাপের মূল পর্ব নিশ্চিত করেছেন। সেই মূল পর্বে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ হচ্ছে চীন, উত্তর কোরিয়া ও উজবেকিস্তানের মতো শক্তিশালী দল।
তাই এই অনূর্ধ্ব-২০ বাছাই পর্বের ম্যাচগুলো জাতীয় দলের জন্য প্রস্তুতির কার্যকর মঞ্চ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। অধিনায়ক আফিদাও সেটি মনে করছেন, ‘এ ম্যাচগুলো আমাদের সিনিয়র দলের জন্য খুব উপকারী হবে। কঠিন প্রতিপক্ষের বিপক্ষে খেলতে পারা মানেই উন্নতির বড় সুযোগ। ’
ছয় বছর আগে বাংলাদেশ নারী দল এএফসি অনূর্ধ্ব-১৯ বাছাই খেলেছিল। এরপর থেকে আর এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন করলে কোচ বাটলার রসিকতা করে বলেন, ‘এটা ২০২৫ সাল, ২০১৯ নয়। আমরা ভবিষ্যতের দিকে তাকাতে চাই, অতীতে পড়ে থাকতে চাই না। ’
বাংলাদেশ নারী ফুটবলের অগ্রযাত্রায় এই অনূর্ধ্ব-২০ দল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। কঠিন প্রতিপক্ষদের বিপক্ষে লড়াই করে জয়ের লক্ষ্যেই লাওসের উদ্দেশে রওনা হচ্ছে বাংলার কিশোরীরা।
এআর/আরইউ