আফগান শরণার্থী নারী ফুটবলারদের নিয়ে ফিফার এক অনন্য উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো প্রথম আন্তর্জাতিক ট্যালেন্ট ক্যাম্প। জুলাই মাসে অস্ট্রেলিয়ার সিডনিতে অনুষ্ঠিত এই ক্যাম্পে অংশ নিয়েছিলেন আফগান জাতীয় দলের সাবেক কয়েকজন খেলোয়াড়, যারা তালেবান শাসনের পর দেশ ছেড়ে পালিয়ে আসেন।
২০২১ সালে তালেবান আফগানিস্তানের ক্ষমতায় ফিরে আসার পর দেশটিতে নারীদের খেলাধুলা সম্পূর্ণভাবে নিষিদ্ধ করে। ফলে জাতীয় নারী দলের খেলোয়াড়দের আন্তর্জাতিক মঞ্চে খেলার স্বপ্নও ছিন্ন হয়ে যায়। ফিফা ও বিশ্ব ফুটবল ফেডারেশনের নিয়ম অনুযায়ী, কোনো দলকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিনিধিত্ব করতে হলে সেই দেশের স্বীকৃত ফুটবল ফেডারেশনের অনুমোদন প্রয়োজন হয়। কিন্তু তালেবান-নিয়ন্ত্রিত আফগান ফুটবল ফেডারেশন নারীদের খেলাধুলারই অনুমতি দেয় না।
তবে চলতি বছর মে মাসে এক নতুন আশার আলো জ্বেলে দেয় ফিফা। তারা ‘আফগান উইমেনস রিফিউজি টিম’ গঠনের অনুমোদন দেয় এবং সাবেক স্কটিশ আন্তর্জাতিক ফুটবলার পলিন হ্যামিলকে দলের কোচ হিসেবে নিয়োগ দেয়। ৫৩ বছর বয়সী হ্যামিল বলেন, ‘এই প্রজেক্ট সত্যিই অসাধারণ। খেলোয়াড়েরা আবার একসঙ্গে মাঠে ফিরতে পারছে, একে অপরের পাশে দাঁড়াচ্ছে। তারা এমন কিছু স্মৃতি গড়বে, যা হয়তো আর কখনো তৈরি হতো না। ’
এই ক্যাম্পের মাধ্যমে ফিফার লক্ষ্য একটি ২৩ সদস্যের দল গঠন করা, যারা চলতি বছর একাধিক আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে অংশ নিতে পারবে। ক্যাম্পে অংশ নেওয়া খেলোয়াড়দের দেওয়া হচ্ছে প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম, স্থানীয় ক্লাবের সঙ্গে সংযোগের সুযোগ, মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা, মিডিয়া প্রশিক্ষণ, এবং খেলাধুলার পাশাপাশি পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ।
ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো বলেন, ‘এই উদ্যোগের মাধ্যমে আমরা নারীদের নিরাপত্তা ও সুস্থতা অক্ষুণ্ন রেখে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফেরার পথ করে দিচ্ছি। ভবিষ্যতে আরও দেশ থেকে শরণার্থী নারী খেলোয়াড়দের অন্তর্ভুক্ত করার ইচ্ছা রয়েছে আমাদের। ’
জুলাইয়ের ক্যাম্পে অংশ নেওয়া নীলাব নামের এক খেলোয়াড় বলেন, ‘আমার লক্ষ্য শুধু নিজের নয়—পুরো আফগানিস্তানের, বিশেষ করে নারী ও কিশোরীদের প্রতিনিধিত্ব করা। এই প্রজেক্ট আমাদের একে অন্যকে সহযোগিতা করতে এবং দেশকে তুলে ধরতে শিখিয়েছে। ’
এমএইচএম