ঢাকা, রবিবার, ২১ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

ফুটবল

আর্জেন্টিনার জার্সিতে দ্যুতি ছড়িয়েই বছর শেষ করলেন মেসি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৯
আর্জেন্টিনার জার্সিতে দ্যুতি ছড়িয়েই বছর শেষ করলেন মেসি লিওনেল মেসি

লিওনেল মেসি আর্জেন্টিনার জার্সিতে ভাল খেলেন না, জাতীয় সঙ্গীত গায় না এমন আরো কতো কতো অভিযোগ যে আছে সমর্থক ও নিন্দুকদের! তবে এবার সব যেন সুদে-আসলে ফেরত দিলেন এলএমটেন। সোমবার (১৮ নভেম্বর) ইসরায়েলের ব্লুমফিল্ডে উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে দেশের হয়ে অনবদ্য এক বছর শেষ করলেন মেসি। 

উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল ২০১৯ বর্ষপঞ্জিতে আর্জেন্টিনার শেষ ম্যাচ। শেষ ম্যাচে অবশ্য ২-২ গোলে ড্র করে সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে লা আলবিসেলেস্তেদের।

তবে সেই ম্যাচেও ফুটবল বিশ্ব দেখেছে মেসি ঝলক। এডিনসন কাভানি ও লুইস সুয়ারেজের গোলে পিছিয়ে পড়েও যোগ করা সময়ে পেনাল্টি থেকে গোল করে আর্জেন্টিনাকে সমতায় ফেরান মেসি।  

বয়স যতো বাড়ছে ততোই বার্সেলোনার জার্সিতে ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠছেন ‘লিও’। দেশের জার্সিতেও প্রতিপক্ষের জন্য ত্রাস হয়ে হয়ে ওঠেছেন তিনি। অধিনায়ত্ব ও আক্রমণভাগের দায়িত্বে থেকে দারুণ এক বছর শেষ করেছেন ৩২ বছর বয়সী ফরোয়ার্ড।  

১০ বছর বয়স থেকে বার্সেলোনায় আছেন মেসি। নাগরিকত্ব আছে আর্জেন্টিনা ও স্পেনের। প্রস্তাব পেয়েছিলেন লা রোহাদের হয়ে খেলার। আর তা হলে হয়তো ২০১০ সালে স্পেনের হয়ে বিশ্বকাপ জেতার স্বাদও পেয়ে যেতেন। কিন্তু মেসি বেছে নিয়েছেন জন্মভূমি আর্জেন্টিনাকে।

২০১০ ব্রাজিল বিশ্বকাপে আকাশী-নীলদের ফাইনালে তুললেও নিন্দুকদের মুখ বন্ধ করতে পারেননি মেসি। দেশের জার্সিকে ভালবাসার অভাব রয়েছে, এমন মন্তব্যও শুনতে হয়েছে তাকে। তার মধ্যে ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে দলের ভরাডুবির জন্য বলির পাঁঠাও বানানো হয় মেসিকে। যার কারণে হতাশ ও বিরক্ত হয়ে জাতীয় দল থেকে সাময়িক বিরতিও নেন।  

তবে যখন ফিরলেন তখন যেন আরো ভয়ঙ্কর অস্ত্র হয়েই ফিরলেন। দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ড্রেসিংরুমে তরুণ সতীর্থদের ভরসাস্থল হয়ে ওঠেন মেসি। যারা বলতো, মেসি সতীর্থদের সঙ্গে কথা বলেন না, তারাও চুপ হয়ে গেলো মেসির নেতৃত্বগুণে। কোপা আমেরিকায় গলা মেলালেন জাতীয় সঙ্গীতে। যেন এক নতুন নেতা পেলো আর্জেন্টিনা।  

কোপা আমেরিকায় আর্জেন্টিনাকে সেমিফাইনালে পৌঁছে দিলেন মেসি। কিন্তু তিনি দুর্দান্ত খেললেও স্বাগতিক ব্রাজিলের বিপক্ষে হেরে ফাইনালের টিকিট কাটতে ব্যর্থ হয় লিওনেল স্কালোনির দল। তার মধ্যে তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে চিলির গ্যারি মেডেলের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে দেখে বসেন লাল কার্ড।  

এরপরেই নিজেদের পরাজয়ের পেছনে রেফারি ও আয়োজদের দাবি করে সমালোচনা করেন মেসি। যার ফলে কনকাকাফের নিষিদ্ধতার খড়গ নেমে আসে বার্সেলোনা তারকার উপর। তবে এসবের মধ্যেও কমেনি মেসির ফুটবল দ্যুতি।  

২০১৯ সালে এসে দেশের সঙ্গে সম্পর্কটা আরো জোরদার করেছেন মেসি। বছর শেষ করার আগে জাতীয় দলের হয়ে ১০ ম্যাচে করেছেন ৫ গোল। সৌদি আরবে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচে তার একমাত্র গোলে জয় পায় আর্জেন্টিনা। সেই ম্যাচে সেলেকাও কোচ তিতেকে মুখে আঙুল দিয়ে চুপ থাকতে বলে সমালোচনার মুখে পড়েন মেসি।  

অবশ্য তাতেও দমে যাননি পাঁচবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকা। উরুগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচে কাভানি যখন লড়াইয়ের আহ্বান জানালেন তখন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে পিছপা হননি মেসি। সেই সঙ্গে জানিয়েছেন, কোচ চাইলে জাতীয় দলের হয়ে খেলে যাওয়ার কথাটা। হয়তো আগামী কাতার বিশ্বকাপের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন মেসি। অধরা বিশ্বকাপটা হাতের মুঠোয় উঁচিয়ে ধরতে চান ফুটবল বিশ্বের এই ক্ষুদে জাদুকর।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১৯
ইউবি 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।