ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ২৬ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

বিলুপ্ত হচ্ছে হটমেইল!

সাব্বিন হাসান, আইসিটি এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১২
বিলুপ্ত হচ্ছে হটমেইল!

হটমেইল ব্র্যান্ডের ইমেইল সেবা আর পাওয়া যাবে না। ইন্টারনেট বিশ্বের সবচেয়ে নন্দিত সেবামাধ্যম হচ্ছে ইমেইল।

আর এ যোগাযোগ মাধ্যমের সূচনা ১৯৯০ সালে। আজকের ইমেইল বিশ্বকে সমৃদ্ধ করেছে হটমেইল। তবে হটমেইল ব্র্যান্ড আর থাকছে না। এমন তথ্যই দিয়েছে মাইক্রোসফট সূত্র।

তবে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। নতুন ব্র্যান্ডনেম আউটলুক ডটকমেই হটমেইলের সব সেবা। অর্থাৎ হটমেইলের সব গ্রাহক এখন আউটলুক ব্র্যান্ডে সেবা গ্রহণ করতে পারবেন।

নতুন ধারার ইমেইল সেবা প্রবর্তনে হটমেইলকে অব্যাহত না রেখে আউটলুক ডটকম তৈরি হয়েছে। চমৎকার সব ফিচারে আউটলুককে উপস্থাপন করতে মাইক্রোসফট শেষ মুহূর্তের কাজ করছে। গত ৮ বছরে ইমেইল সেবায় গ্রাহকদের ধ্যানধারণা অনেক আধুনিক হয়েছে।

ইমেইল এখন আর শুধু ইলেকট্রনিক বার্তার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বরং পূর্ণাঙ্গ একটি যোগাযোগমাধ্যমে দাবি রাখে। এ ধারণা থেকেই একেবারে নব অবয়বে হটমেইলকে ঢেলে সাজাতেই আউটলুকের আগমন হচ্ছে।

এ মুহূর্তে বিশ্বব্যাপী হটমেইলের ৩৫ কোটি সক্রিয় গ্রাহক আছে। ২০০৭ সালে গুগলের জিমইেল আসার আগ পর্যন্ত হটমেইলই ছিল সেরা ইমেইল। গত ৫ বছরে ৪২ কোটি ৫০ লাখ জিমেইল গ্রাহক তৈরি হয়েছে। এমনটাই দাবি করছে গুগল।

ওয়েবভিত্তিক গবেষণাপ্রতিষ্ঠান কমস্কোর সূত্র জানিয়েছে, গ্রাহক সংখ্যায় পিছিয়ে গেলেও অনলাইন ট্রাফিক তৈরিতে হটমেইলের অবস্থান এখনও শীর্ষে। ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত মাসিক হিসাবে হটমেইলের ভিজিটর সংখ্যা ৩২ কোটি ৪০ লাখ, ইয়াহুর ২৯ কোটি এবং জিমেইলে ২৭ কোটি ৪০ লাখ।

অচিরেই প্রতিটি হটমেইল গ্রাহককে আউটলুকে অ্যাকাউন্ট পরিবর্তনের আহ্বান ইমেইলে জানিয়ে দেওয়া হবে। এটি হবে পর্যায়ক্রমে। মাইক্রোসফটের সব ধরনের সেবাপণ্য, উইন্ডোজ সিস্টেম এবং অফিস সেবাকে সুসম্প্রসারিত করতেই এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

ইমেইল অভিজ্ঞতার নবযুগের সূচনা করবে আউটলুক। অপেক্ষাকৃত কম বিজ্ঞাপনী বার্তা এবং সামাজিক যোগাযোগ টুইটার ও ফেসবুকের সঙ্গে একই মাধ্যমে সংযোগ তৈরিতে আউটলুক অনবদ্য হবে।

ইমেইলের মাধ্যমেই টুইটার এবং ফেসবুক স্ট্যাটাসের নিত্যনতুন ফিচার এবং বার্তা একযোগে উপভোগ্য করে তুলবে আউটলুক।
 
মাইক্রোসফট উইন্ডোজ লাইভ বিভাগের করপোরেট সহ-সভাপতি ক্রিস জোনস বলেন, ইমেইলকে ঢেলে সাজানোর এটা উপযুক্ত সময়। আর তাই পুরনো নয়, একেবারে নতুর আঙ্গিকে ব্র্যান্ডনেম নিয়ে আসছে মাইক্রোসফট।

ইমেইলভিত্তিক বড় ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার এটাই সুসময়। এর মাধ্যমে নতুন সেবাগুণ দিয়ে নতুন ঘরানার ইমেইল গ্রুপ তৈরি করা সম্ভব। অতীতের ব্র্যান্ডকে নতুন ভাষা না দিয়ে, একেবারে নতুন নামে মাঠে নামতেই মাইক্রোসফট এমন সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে। এভাবেই আউটলুক ইমেইল সেবা সম্পর্কে মন্তব্য করলেন ক্রিস জোনস।

এ অর্থে আপাতত বিদায়ই নিচ্ছে হটমেইল। এর ফলে সুদীর্ঘ সময় ধরে আসা একটি সফল ব্র্যান্ডের ইতি টানকে যাচ্ছে মাইক্রোসফট। অনলাইন গ্রাহকদের কাছেও হটমেইলের কদর কম ছিল না। অনলাইন ইতিহাসে হটমেইলের নাম এত সহজেই মুছে যাওয়ার নয়।

প্রসঙ্গত ১৯৯৭ সালে মাইক্রোসফট ইমেইল সেবাদাতা ব্র্যান্ড হটমেইল কিনে নেয়। এজন্য মাইক্রোসফট হটমেইলের সে সময়ের মালিক সাবির ভাটিয়া এবং জ্যাক স্মিথকে ৪০ কোটি ডলার বিক্রিমূল্য প্রদান করেন।

জিমেইল সূচনার এক যুগ আগেই হটমেইল যাত্রা শুরু করে করে। কিন্তু সময় এবং আধুনিকতার তাল সামলে উঠতে না পারায় খানিকটা জনপ্রিয়তা হারায় হটমেইল। আর তাই এক যুগ পরে এসে হটমেইলের ইতি টানল মাইক্রোসফট।

বাংলাদেশ সময় ২২০৯ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১২

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।