ঢাকা, বুধবার, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

তথ্যপ্রযুক্তি

তরঙ্গ ফিরে পেয়েছে সিটিসেল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৫৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭
তরঙ্গ ফিরে পেয়েছে সিটিসেল

ঢাকা: সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশের পর তরঙ্গ ফিরে পেয়েছে দেশের প্রথম মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেল।

মঙ্গলবার (২৫ জুলাই) রাতে সিটিসেল কর্তৃপক্ষকে এ সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)।
 
২৪ ঘণ্টার মধ্যে সিটিসেলের তরঙ্গ ফেরত দিতে বিটিআরসিকে মঙ্গলবার নির্দেশ দেয় সুপ্রীম কোর্টের আপিল বিভাগ।

সেই সঙ্গে এই অপারেটরের রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি লাইসেন্স পুনর্বহালের আদেশও দেওয়া হয়।
 
দেশের প্রথম বেসরকারি মোবাইল ফোন অপারেটর সিটিসেলের লাইসেন্স সোমবার (২৪ জুলাই) বাতিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিটিআরসি।
 
বিটিআরসির বিরুদ্ধে সিটিসেলের করা আদালত অবমাননার আবেদনের শুনানি শেষে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তরঙ্গ খুলে দিতে আদেশ দেন প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বে তিন বিচারপতির আপিল বেঞ্চ।  
 
সিটিসেলের লাইসেন্স পুনর্বহালেরও আদেশ দিয়ে আগামী ৬ আগস্ট আদালত অবমাননার বিষয়ে আদেশের দিন ধার্য করেছেন সর্বোচ্চ আদালত।
 
বিটিআরসির একজন কর্মকর্তা জানান, আদালতের নির্দেশের পর ই-মেইলের মাধ্যমে চিঠি পাঠিয়ে তরঙ্গ খুলে দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছে। রাজস্ব বাকি থাকায় গত জুন মাসে সিটিসেলকে চিঠি পাঠিয়ে তরঙ্গ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে আগে থেকেই অকার্যকর ছিল সিটিসেল।
 
তারও আগে নভেম্বরে মহাখালীতে সিটিসেলের অফিসে বিটিআরসি কর্মকর্তারা সিলগালা করে দিয়েছিল।  
 
সিটিসেলের কাছে পাওনা না দেওয়ায় গত বছরের ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছিল বিটিআরসি।

এরপর ২৪ অক্টোবর তরঙ্গ বরাদ্দ খুলে দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন জানায় সিটিসেল। মোবাইল ফোন অপারেটরটির আইনজীবীরা সেদিন দাবি করেছিলেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুসারে বিটিআরসি ও এনবিআরের ১৪৪ কোটি টাকা শোধ করা হয়েছে। এরপরও তরঙ্গ কার্যক্রম বন্ধ করা হয়েছে।
 
আবেদনের প্রেক্ষিতে গত বছরের ৩ নভেম্বর থেকে ১৯ নভেম্বরের মধ্যে ১০০ কোটি টাকা পরিশোধের শর্ত সাপেক্ষে মোবাইল অপারেটর সিটিসেলের তরঙ্গ বরাদ্দ অবিলম্বে খুলে দেওয়ার আদেশ দেন আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ। ওইদিনের মধ্যে টাকা পরিশোধ না করা হলে বিটিআরসিকে ফের তরঙ্গ বরাদ্দ বন্ধ করতেও বলেন সর্বোচ্চ আদালত।
 
এরপর অর্থ পরিশোধ সত্ত্বেও এ আদেশ না পালনের অভিযোগে বিটিআরসি’র চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার আবেদন জানায় সিটিসেল।
 
আদালতে বিটিআরসি’র পক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম, কামরুল হক ও খন্দকার রেজা-ই রাকিব। সিটিসেলের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ ও আহসানুল করিম।
 
গত বছরের ৩১ জুলাই পৌনে ৫শ’ কোটি টাকা রাজস্ব বকেয়া থাকা সিটিসেল গ্রাহকদের ১৬ আগস্টের মধ্যে বিকল্প সেবা গ্রহণের পরামর্শ দেয় বিটিআরসি, যা পরে ২৩ আগস্ট পর্যন্ত বাড়ানো হয়।
 
এরপর গত বছরের ১৭ আগস্ট একমাসের শো’কজ নোটিশ দিয়ে সিটিসেলকে চিঠি দেয় বিটিআরসি। তবে ২৩ আগস্ট সিটিসেলের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অর্থাৎ, অপারেশনাল কার্যক্রম বন্ধ করে দেওয়ার কথা ছিলো। এর মধ্যে সিটিসেলের আবেদনের প্রেক্ষিতে ২২ আগস্ট বিটিআরসি’র পক্ষ থেকে সিটিসেলকে দেওয়া শো’কজ নোটিশের সময় পর্যন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এর বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে আবেদন করে বিটিআরসি।
 
গত বছরের ২৯ আগস্ট আপিল বিভাগ বিটিআরসি’র ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা পাওনা পরিশোধে সিটিসেলকে দু’মাস সময় দেন। এর মধ্যে প্রথম মাসে তিন ভাগের দুই ভাগ ও দ্বিতীয় মাসে বাকি টাকা দেওয়ার আদেশ দেন।
 
বিটিআরসি’র একজন কর্মকর্তা বাংলানিউজকে জানান, আদালতের  এসব আদেশেও সম্পূর্ণ পাওনা না দেওয়ায় সরকারের অনুমোদনের পরে সোমবারের কমিশন বৈঠকে সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
 
গত সপ্তাহে অপারেটরটির লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনের ফাইল বিটিআরসিতে যায়।
 
বাংলাদেশ সময়: ২২৫০ ঘণ্টা, জুলাই ২৫, ২০১৭/আপেডট ০০২৮
এমআইএইচ/বিএস
 

 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।