ঢাকা: ডিজিটাল বাংলাদেশের পর স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ করছে সরকার। আগামী ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
শনিবার (৩০ জুলাই) রাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ক বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা জানান আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক।
জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, ১৩ বছরে ২ হাজারের বেশি সেবাকে ডিজিটালাইজেশন করা হয়েছে। শুধুমাত্র মাইগভ অ্যাপ থেকেই ৬০০ এর বেশি সেবা দেওয়া হচ্ছে। এখন আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে কাজ শুরু করেছি। ২০২৫ সালের মধ্যে প্রায় ২ লাখ বিদ্যালয়, ভূমি অফিস, হেলথ কমপ্লেক্সকে ফাইবার অপটিকের আওতায় আনা হবে। শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাবের মাধ্যমে প্রাথমিক পর্যায়েই শিক্ষার্থীরা প্রোগ্রামিংয়ের কাজ করছে। আর সঙ্গে আছে ফ্রিল্যান্সিং। ১৩ বছরের মধ্যে ১৩ কোটি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী তৈরি হয়েছে। তরুণরা এখন ঢাকামুখী না হয়ে উপজেলা বা গ্রামে বসেই ডলার এবং ইউরো আয় করছে।
তিনি বলেন, সংবাদ হচ্ছে সমাজের দর্পন। আগামীতে শেখ হাসিনার সরকারের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জায়গায় জনগণের মতামত যাতে আরও প্রতিফলিত হয়, সে কারণে ৫৬টি মন্ত্রণালয়কে সম্পৃক্ত করে আগামী দুই তিন মাসের মধ্যে অত্যন্ত আধুনিক পোর্টাল চালু করতে যাচ্ছি। যেটি হচ্ছে 'জনতার সরকার পোর্টাল'। যেখানে আমরা যেকোনো সিদ্ধান্ত, নীতিনির্ধারকদের যেকোনো বক্তব্য, যেটির প্রতিক্রিয়া সোশ্যাল মিডিয়া কিংবা নিউজ মিডিয়াতে আসে, সেগুলোর প্রতিফলন যাতে আমাদের ভবিষ্যৎ নীতি নির্ধারণে সঠিকভাবে প্রতিফলিত হয়, সেজন্য আমরা এই পোর্টাল অল্প দিনের মধ্যে চালু করবো। এতে করে সাংবাদিকদের আরও কাজ করার সুযোগ তৈরি হবে। সরকারের নীতি নির্ধারণে এটি সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।
তিনি আরও বলেন, এর পাশাপাশি আমরা একটি ডিজিটাল লিডারশিপ তৈরির অনুমোদন পেয়েছি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে। সেখানে ধারাবাহিকভাবে সাংবাদিকরা দক্ষতা অর্জন করবেন যাতে বিশ্বে আমাদের সাংবাদিকরা নেতৃত্ব দিতে পারেন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা যাতে বিশ্বমানের সাংবাদিকতা করতে পারেন। সে কারণে আমরা ডিজিটাল লিডারশিপের মাধ্যমে ট্রেনিং, ওরিয়েন্টেশন ও এনহেঁচমেন্ট করতে পারবো।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব কে এম শাখাওয়াত মুন, উপ প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকর্ণ কুমার ঘোষ, ডিবিসির সম্পাদক জায়েদুল হাসান পিন্টু, ঢাকা ট্রিবিউনের নির্বাহী সম্পাদক রিয়াজ আহমেদ, এটিএন নিউজের বার্তা প্রধান প্রভাষ আমিন প্রমুখ।
প্রধানমন্ত্রীর উপ প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার বলেন, আমরা মাঠ পর্যায়ে যা দেখেছি, ডিজিটাল বাংলাদেশ সম্পর্কে যতটুকু বলা হচ্ছে, মাঠ পর্যায়ে তার থেকে অনেক বেশি কাজ হয়েছে। গণমাধ্যম কর্মীরাও তা দেখেছেন এবং লিখেছেন। মানুষের জন্য উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী যে কাজ করে যাচ্ছেন, তারই রূপ ডিজিটাল বাংলাদেশ। তার সেবা এখন ১৬ কোটি ৫২ লাখ মানুষ ভোগ করছেন। ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে শূন্য থেকে কোটি টাকার মালিক হওয়ার হাজারো গল্প আছে। আগামীতে এই গল্পগুলো আরও উঠে আসবে এমন প্রত্যাশা।
পুরস্কার প্রদান বিষয়ক জুরিবোর্ডের সদস্য জাহিদুল আহসান পিন্টু বলেন, ৯০ এর দশকেও আমাদের সংবাদ পেতে ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হতো। সংবাদ পাঠাতেও অনেক কষ্ট ছিল। তবে এখন আমরা মিনিট নয়, প্রতি সেকেন্ডে আপডেট দিতে পারছি, নিতে পারছি। এটাও ডিজিটাল বাংলাদেশের ফল। সামনে এই ডিজিটাল বাংলাদেশের ফলে আমাদের সংবাদ মাধ্যমে যেমন আরও সফলতা আসবে, তেমনি নজরদারিও বাড়বে। তাই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেই আমাদের এগোতে হবে এবং সুযোগ সুবিধা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানাবো।
বাংলাদেশ হাইটেক পার্কের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (গ্রেড-১) বিকর্ণ কুমার ঘোষ বলেন, আমাদের দেশ হবে ইনোভেটিভ নেশন। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে আমাদের সংবাদ মাধ্যম।
আয়োজন থেকে প্রতিবছর ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে রিপোর্টিংয়ে কয়েকটি ক্যাটাগরিতে পুরস্কার প্রদান করা হবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়।
আয়োজনে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিষয়ক বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড পান টেলিভিশন ক্যাটাগরিতে বাংলাভিশনের শিহাব হোসেন, চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের মুরসালিন হক জুনায়েদ, বাংলাদেশ টেলিভিশনের কুমার বিশ্বজিৎ রায় এবং ৭১ টিভির শেখ রাকিবুল হাসান।
পত্রিকা ও অনলাইন ক্যাটাগরিতে সমকালের রাশেদ মেহেদী, ঢাকা পোস্টের আবু সালেহ সাহাদাত, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) সৈয়দ এলতেফাত হোসাইন, ইত্তেফাকের সমীর কুমার দে মণ্ডল এবং দেশ রূপান্তরের উম্মুল ওয়ারা সুইটি।
বাংলাদেশ সময়: ২৩২৫ ঘণ্টা, জুলাই ৩০, ২০২২
এইচএমএস/আরএ