ঢাকা : গাদ্দাফি শাসনামলে বিভিন্ন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত শীর্ষ কর্মকর্তাদের বিচার শুরু হয়েছে লিবিয়ায়। গাদ্দাফি বিরোধী আন্দোলনের সময় লিবিয়ার গোয়েন্দা প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করা জু জাইদ দোরদারকে আদালতে উপস্থিত করার মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে এই বিচার কার্যক্রম শুরু হয় বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম।
গাদ্দাফি বিরোধী অভ্যুত্থানের সময় বিরোধী প্রতিবাদকারী ও বেসামরিক লিবীয়দের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধ সংঘটনের অভিযোগে তাদের বিচারের সম্মুখীন করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। গাদ্দাফির শীর্ষ সহযোগীদের মধ্যে দোরদাই প্রথম ব্যক্তি যাকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারের সম্মুখীন করা হলো।
গাদ্দাফির পরিবারের সদস্য ও তার বিশ্বস্ত সহযোগীদের বিচার করার মাধ্যমে নিজেদের সক্ষমতার প্রমাণ দিতেই দেশটির অন্তবর্তীকালীন সরকার এই বিচারকার্য্য শুরু করলো বলে ধারণা করছেন বিশ্লেষকরা।
গত সেপ্টেমবার মাসে রাজধানী ত্রিপোলি থেকে আটক হওয়া দোরদাকে মঙ্গলবার কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়। শুনানির শুরুতে আদালতের বিচারক আল আজাইলি আল মালুল তার বিরুদ্ধে আনা ছয়টি অভিযোগ পাঠ করে শোনান। প্রাথমিকভাবে বেসামরিক নাগরিক হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত থাকা, তাদের হত্যার জন্য অস্ত্র সরবরাহ করা, গৃহযুদ্ধের উস্কানি দেওয়া, জনগণের নিয়মতান্ত্রিক প্রতিবাদের অধিকার খর্ব করা এবং বেআইনী আটকাদেশের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার করার অভিযোগ আনা হয়েছে তার বিরুদ্ধে। তবে সব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন অভিযুক্ত দোরদা।
এদিকে প্রথমদিনের শুনানি শেষে আগামী ২৬ জুন পর্যন্ত কার্য্যক্রম মুলতবি রাখার ঘোষণা দিয়েছে আদালত। বিবাদী আইনজীবির আবেদনের প্রেক্ষিতে এ নির্দেশ দেয় আদালত।
উল্লেখ্য, কারাগার থেকে গত মাসে পালানোর চেষ্টা করেন দোরদা। কারাগারের জানালা থেকে পড়ে এ সময় তিনি পায়ে আঘাত পান বলে জানা যায়। ১৯৬৯ সালের বিপ্লবের পর থেকেই গাদ্দাফির সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন দোরদা। পেশাদার গোয়েন্দা কর্মকর্তা না হলেও গাদ্দাফি তাকে ২০০৯ সালে গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হিসেবে নিয়োগ দেন।
শুনানির সময় আদালতে তার ভাই আব্দুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম। তার ভাই ন্যায় বিচার পাবেন বলে এ সময় আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
লিবিয়ার ক্ষমতাসীন শাসন পরিষদ গাদ্দাফি পরিবার ও তার ঘনিষ্ঠ সহযোগীদের বিচারের মুখোমুখি করতে বদ্ধ পরিকর। তবে শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকারের অনুপস্থিতি এবং প্রয়োজনীয় আইন না থাকার কারণে এই বিচার প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৫ ঘণ্টা, জুন ০৬, ২০১২
সম্পাদনা:রাইসুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর