ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ব্রাজিলের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১, ২০১০
ব্রাজিলের প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত

ব্রাসিলিয়া: লুইস ইনাসিও লুলা দ্য সিলভার উত্তরসূরী হিসেবে ব্রাজিলের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো একজন নারী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন। রোববার দিলমা রৌসেফ তার প্রতিপক্ষ হোসে সেরাকে পরাজিত করে এ ইতিহাস সৃষ্টি করেন।



সরকারি তথ্য মতে, মোট ৯৫ শতাংশ ভোট গণনায় ৫৫ ভাগ পেয়েছেন দিলমা।

৬২ বছর বয়সী এই নারী গেরিলা তৎপরতার ১৯৭০-র দশকে জেল খেটেছেন। পরে মূলধারার রাজনীতিতে ফিরে আসেন। কাজ করেন লুলার মন্ত্রিসভায়।

লুলা দ্য সিলভা (৬৫) পরপর দুইবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব করেছেন। সংবিধান অনুযায়ী তিনি আর প্রেসিডেন্ট থাকতে পারছেন না। রৌসেফ সম্পর্কে লুলা বলেন, ‘রৌসেফ তার নিজের মতো করে সরকার গঠন করবেন। আমার আশা, আমি যা করেছি তার চেয়েও তিনি বেশি কাজ করবেন। ’

ব্রাজিলের গণমাধ্যমগুলো রৌসেফকে ‘লৌহমানবী’ সম্বোধন শুরু করেছেন। বজ্রকঠিন মনোভাবের কারণেই তার সম্পর্কে এই বিশেষণ। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার লৌহমানবী হিসেবে পরিচিত।

দিলমা সম্পর্কে
১৯৪৭-এ জন্ম দিলমা রৌসেফের বাবাও মার্কসবাদী রাজনীতিক ছিলেন। ছোট বয়সেই বাবার প্রেরণায় পড়াশুনার অভ্যাস তৈরি হয়। বাবা ছিলেন বুলগেরীয় বংশোদ্ভূত। তরুণ বয়সে মার্কসবাদী গেরিলাদের সঙ্গে যুক্ত হন। নিষিদ্ধ আন্ডারগ্রাউন্ড রাজনীতি করেন। সেই সময়েই অস্ত্র চালনা থেকে শুরু করে সব গেরিলা কৌশল রপ্ত করেন।   রেগিস ডিব্রের বিখ্যাত বই ‘দ্য রেভল্যুশন ইনসাইড দ্য রেভল্যুশন’ পড়ে প্রচণ্ড অনুপ্রাণিত হন। ব্রাজিলের তৎকালীন সামরিক একনায়কতন্ত্রের বিরুদ্ধে আন্ডারগ্রাউন্ডে থেকে সশস্ত্র লড়াই করেন। এই অপরাধে ১৯৭০ থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত জেল খেটেছেন। এসময় তার ওপর নির্যাতন ও নিপীড়ন করা হয়।

দিলমার মতে, বিদ্যালয় জীবনেই তিনি তার দেশের রাজনীতি সম্পর্কে সচেতন হন। ১৯৬৭ সালে তিনি ওয়ার্কার্স পলিটিক্স নামের সংগঠনে যোগ দেন। সমাজতন্ত্র বাস্তবায়নের প্রশ্নে সংগঠনটি একসময় দুই ভাগ হয়ে যায়। এক অংশ পার্লামেন্ট নির্বাচনের মাধ্যমে মতা দখলের পক্ষ নেয়, আরেক অংশ সশস্ত্র সংগ্রামকেই বেছে নেয়। সশস্ত্রপন্থী দলটির নাম হয় কমান্ড অব ন্যাশনাল লিবারেশন। দিলমা বেছে নেন শেষোক্ত দলকে। এসময় মার্কসবাদী আদর্শ ছড়িয়ে দিতে বিভিন্ন শ্রমিক ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করেন।

১৯৭২ সালে জেল থেকে ছাড়া পাবার পর নানা কাজের সঙ্গে যুক্ত হন তিনি। লেখাপড়ার চেষ্টাও করেন। পুরনো গেরিলা বন্ধুদের সংগঠিত করার চেষ্টা করেন। ২০০০ সালে যোগ দেন লুলার ওয়ার্কার্স পার্টিতে (পারতিদো দস ত্রাবালহাদোরেস--পিটি)। নির্বাচনে জয়লাভ করার পর লুলা তাকে জ্বালানিমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। আর পরে তার পুরোটাই ইতিহাস। ব্রাজিলের ইতিহাসে নতুন অধ্যায় শুরু করতে যাচ্ছেন তিনি। আর ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে জনগণ তার সঙ্গেই রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৯২৭ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১০

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।