ব্যাংকক: পৃথিবীর সবচেয়ে পুরনো একনায়কতন্ত্রের দেশগুলোর একটি মিয়ানমার। দেশটির সামরিক জান্তাপ্রধান তার বজ্রকঠিন শাসনের ছেদ টানছেন কি না সেদিকেই চেয়ে আছে বিশ্ববাসী।
গত ২০ বছরে এই প্রথম সেখানে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে আগামী ৭ নভেম্বর। জেনারেলরা একে বলছেন, এর মধ্য দিয়ে প্রায় পাঁচ দশক ধরে চলা স্বৈরাচারী শাসনের পর মিয়ানমারে গণতন্ত্রের উষা উন্মোচিত হবে। তবে জান্তাপ্রধান থান শোয়ের ইচ্ছা এখনো অবগুণ্ঠিতই রয়ে গেছে।
বহুল প্রচারণা রয়েছে, মিয়ানমারের সশ্রস্ত্র তাতমাদাউ (সামরিক বাহিনী)-র কমান্ডার-ইন-চিফ পদ থেকে ৭৭ বছর বয়সী শোয়ে সরে যাবেন। তরুণ লেফটেন্যান্টদের কাছে মতা বুঝিয়ে দেবেন।
থাইল্যান্ডভিত্তিক সাময়িকী ‘ইরাওয়াদ্দি’র প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক অং জাউ বলেন, ‘আমি মনে করি না অবসর নিতে তিনি খুশি হবেন। ’ মিয়ানমার থেকে নির্বাসিত লোকজনই ওই সাময়িকীটির সঙ্গে যুক্ত।
তিনি আরও বলেন, ‘যতদিন পারা যায় ততদিন তিনি মতায় থাকবেন। কারণ তিনি তার নিজের ভবিষ্যৎ নিয়েই চিন্তিত। গত ৫/১০ বছরে তিনি অনেক শত্র“ তৈরি করেছেন। ’
থান শোয়ে ৭ নভেম্বরের নির্বাচনের প্রার্থী নন। তবে জান্তাসমর্থিত পার্টি নির্বাচনে জিতলে তিনি হয়ত দেশটির প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেবেন। ২০০৮ সালে তৈরি নতুন সংবিধানে নতুন পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্ট পদটি রাখা হয়েছে।
অং জাউ বলেন, এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বাসভাজন ও দুর্বল কারও কাছে মতা হস্তান্তর করতে পারেন। থান শোয়ে তার উত্তরসূরী নির্বাচনের ঝুঁকির ব্যাপারটা বেশ ভালোই জানেন।
পশ্চিমা শক্তিগুলো রোববারের নির্বাচনের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। সামরিক শাসনকে বৈধতা দানের জন্য একে একটি কৌশল হিসেবে অভিহিত করছেন নির্বাসিত লোকজন।
গত দুই দশকে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনীর দ্বিগুণ আয়তন বেড়েছে। সাড়ে তিন লাখ থেকে চার লাখ সেনাসদস্য বাহিনীতে রয়েছে বলে অনুমান করা হয়।
অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী বিশেষজ্ঞ অ্যান্ড্রু সেল্থ বলেন, ‘তাতমাদাউ সহজেই মতা চেড়ে ব্যারাকে ফিরবে না। ’
মিয়ানমারের শিক্ষাবিদ উইন মিন জানান, থান শোয়ে যদি উত্তরসূরী হিসেবে এমন একজন লোককে খুঁজে পান যিনি তার প্রতি সম্পূর্ণ অনুগত, তখন তিনি একটি সম্মানজনক পদ বেছে নেবেন। সেখান থেকেই মতার কলকাঠি নাড়বেন।
তবে উইন মিন বলেন,‘ কমান্ডার-ইন-চিফ সবচেয়ে মতাধর ব্যক্তি। সুতরাং এটাই তার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ পদ। ’ এএফপি অবলম্বনে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১০০