ইউরোপের জনজীবন স্মরণকালের ভয়াবহ তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত। স্পেন, ফ্রান্স, ইতালি, পর্তুগাল, জার্মানি ও যুক্তরাজ্যসহ কয়েকটি দেশের কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়ে গেছে, যা এখন পর্যন্ত অন্যতম সর্বোচ্চ রেকর্ড।
জার্মানির বিভিন্ন গণমাধ্যম জানিয়েছে, পরিবেশের এই ভয়াবহ অবস্থায় ইউরোপের পরিবেশকর্মী ও তরুণরা রাস্তায় নেমে এসেছেন। তরুণদের বিভিন্ন সংগঠন ১ জুলাই থেকে ৩১ জুলাই পর্যন্ত প্লাস্টিকমুক্ত ইউরোপ গড়ার জন্য বড় ধরনের প্রচারণা শুরু করেছে। পরিবেশবাদী সংগঠন ‘ফ্রাইডেস ফর ফিউচার স্ট্রাইক’ জানিয়েছে, আগামী শুক্রবার ও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে ইউরোপের বিভিন্ন শহরে পরিবেশ রক্ষায় আন্দোলন ও সচেতনতা কর্মসূচি পালন করা হবে।
এ ছাড়া, জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্তদের নিয়ে আগামী ১৫ জুলাই ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যালয় ব্রাসেলসে এক বিশাল গণজমায়েতের ডাক দেওয়া হয়েছে। এই জমায়েত থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে পরিবেশ রক্ষায় আরও সক্রিয় হওয়ার আহ্বান জানানো হবে।
ইউরোপজুড়ে রেড অ্যালার্ট
ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালে ‘রেড অ্যালার্ট’ জারি করা হয়েছে, যা এখনো চলছে। ইতালির সিসিলি ও গ্রিসে দাবানলের ঝুঁকিও বেড়েছে। জার্মানির ব্রান্ডেনবুর্গের একটি জঙ্গলে মঙ্গলবার রাতে আগুন লাগে, যা পরে ১৫০ জন দমকলকর্মী নিয়ন্ত্রণে আনেন। ইউরোপের অনেক শহরে জরুরি ভিত্তিতে রাস্তায় ঠান্ডা পানির ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পরিবেশবাদীদের সোচ্চার প্রতিবাদ
তাপপ্রবাহের এই অস্বাভাবিক প্রবণতাকে জলবায়ু পরিবর্তনের সরাসরি ফল বলে দাবি করছেন ইউরোপের পরিবেশকর্মীরা। সোমবার ১ জুলাই ও মঙ্গলবার ফ্রান্স, স্পেন, নেদারল্যান্ডস এবং জার্মানির বড় বড় শহরের রাস্তাগুলো ‘ক্লাইমেট অ্যাকশন নাউ’ এবং ‘প্ল্যানেট ওভার প্রফিট’ স্লোগানে মুখর ছিল।
পরিবেশকর্মীদের অভিযোগ, ইউরোপীয় রাজনীতিকদের ‘রাজনৈতিক কৌশল’ ও ‘জলবায়ু ইস্যুতে গাফিলতি’ পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের গ্রিন ট্রানজিশন বিভাগের প্রধান তেরেসা রিবেরা এক বিবৃতিতে বলেন, জলবায়ু সংকট মোকাবিলায় রাজনৈতিক ভয় এখন সবচেয়ে বড় বাধা। এখনই কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে যাবে।
এদিকে, ‘টিবিডি’ (টু বি ডিটারমাইন্ড), ‘এক্সটিনশন রেবেলিয়ান’ এবং ‘লাস্ট জেনারেশন জার্মানি’ নামের কয়েকটি সংগঠন দেশজুড়ে পরিবেশ রক্ষায় আইন অমান্য কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছে। তবে পুলিশি বাধার আশঙ্কায় তারা এখনো নির্দিষ্ট তারিখ জানায়নি।
আরএইচ