দক্ষিণ কোরিয়ার সংসদ সদস্যরা সামরিক আইনের ধারা সংশোধনের পক্ষে ভোট দিয়েছেন। সংশোধিত ধারায় স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, এখন থেকে কোনো অবস্থাতেই সংসদ সদস্যদের জাতীয় পরিষদে প্রবেশে বাধা দেওয়া যাবে না।
গত বছরের ডিসেম্বরে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইউন সুক-ইওলের স্বল্প সময়ের সামরিক আইন ঘোষণার পর দেশটি তীব্র রাজনৈতিক সংকটে পড়ে।
ঘটনার দিন রাতে যখন সামরিক বাহিনী জাতীয় পরিষদের সামনে অবস্থান নেয়, তখন সংসদ সদস্যদের দেয়াল বেয়ে উঠে ইউনের সামরিক আইন বাতিলের জন্য ভোট দিতে হয়েছিল।
বৃহস্পতিবারের সংশোধনীতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, এখন থেকে স্পিকারের অনুমতি ছাড়া সেনাবাহিনী বা পুলিশ জাতীয় পরিষদে প্রবেশ করতে পারবে না।
২০২৪ সালের ৩ ডিসেম্বর ইউন সুক ইওল সামরিক আইন জারি করেছিলেন। তিনি দাবি করেন, এই পদক্ষেপ দেশকে ‘উত্তর কোরিয়া-সমর্থক দেশবিরোধী শক্তি’ থেকে রক্ষার জন্য জরুরি ছিল।
তবে এ দাবির পক্ষে তিনি কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ দিতে পারেননি। এই সংকট দক্ষিণ কোরিয়াকে নাড়িয়ে দেয়। দেশটি আশির দশকের শেষ দিকে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দীর্ঘ সেনাশাসন থেকে মুক্ত হয়েছিল।
ডিসেম্বরের ঘটনায় ইউনের প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তাদের বরখাস্ত ও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ইউন নিজেও অভ্যুত্থান ও বিদ্রোহের অভিযোগে অভিশংসিত হয়ে পদচ্যুত হয়েছেন এবং বর্তমানে তার বিরুদ্ধে মামলা চলছে।
এ সংকটের ফলে ইউনের দল পিপল পাওয়ার পার্টি গভীর বিভ্রান্তিতে পড়ে। এরপর জুনে আয়োজিত বিশেষ নির্বাচনে বিরোধী দলীয় প্রার্থী লি জায়ে-মিয়ং প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের ৩০তম দিনে বৃহস্পতিবার সিউলে এক সংবাদ সম্মেলনে লি জায়ে-মিয়ং বলেন, তার প্রশাসন উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে সম্পর্কোন্নয়নের চেষ্টা করবে। এটি তার পূর্বসূরির কড়া অবস্থানের বিপরীতমুখী বার্তা।
তবে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজনীতি এখনো তীব্রভাবে বিভক্ত। বৃহস্পতিবার পার্লামেন্টে প্রধানমন্ত্রী মনোনীত ব্যক্তির অনুমোদনের সময় ইউনের দল, যারা এখন প্রধান বিরোধী দল, সেই ভোট বর্জন করে।
আরএইচ