ঢাকা: ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) জ্যেষ্ঠ নেতা লাল কৃষ্ণ আদভানি দলের সব পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। দলের আরেক প্রভাবশালী নেতা নরেদ্র মোদি আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে প্রচারণা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার পর আদভানির পদত্যাগের ঘটনা ঘটল।
সোমবার দুপুর ২টার দিকে ভারতের একটি সংবাদ মাধ্যম আদভানির পদত্যাগের সংবাদটি জানায়।
আদভানি দলের সভাপতি রাজনাথ সিংয়ের কাছে পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। রাজনাথ সিংকে দেওয়া পত্রে তিনি লিখেছেন, “শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি, দীনদয়াল উপাধ্যায় এ বি বাজপেয়ীর প্রতিষ্ঠিত দলে আর থাকার ইচ্ছা নেই আমার। ...বিজেপির অধিকাংশ নেতাই এখন ব্যস্ত ব্যক্তিগত এজেন্ডা বাস্তবায়নে। ”
গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী নরেদ্র মোদির সঙ্গে আদভানির ভালো সম্পর্ক যাচ্ছিল না। দলে মোদিকে উঁচু আসনে অধিষ্ঠিত করায় আদভানি পদত্যাগ করলেন বলে ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে।
বিজেপির প্রতিষ্ঠার ছয় বছর পর ১৯৮৬ সালে দলের প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন আদভানি। ১৯৯৮ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ীর নেতৃত্বাধীন সরকারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। পরে তিনি উপপ্রধানমন্ত্রীর পদে আসীন হন।
২০০৪ সালের নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর সক্রিয় রাজনীতি থেকে বিদায় নেন অটল বিহারী। দলের নেতৃত্ব পান আদভানি। ২০০৪-২০০৯ সাল পর্যন্ত লোকসভায় বিরোধী দলীয় নেতা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি।
গুরু আদভানির সঙ্গে শিষ্য মোদির দ্বন্দ্ব প্রথম প্রকাশ্যে রূপ নেয় ২০০৫ সালে। ওই সময় পাকিস্তান সফরকালে আদভানি পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মোহাম্মদ আলি জিন্নাহকে ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ ও হিন্দু-মুসলমান ঐক্যের দূত’ হিসেবে অভিহিত করেন। এ নিয়ে বিতর্ক শুরু হলে আদভানি পাশে মোদিকে পায়নি। এরপর থেকে দুজনের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল।
২০১৪ সালের সাধারণ নির্বাচনী গুজরাট দাঙ্গার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে অভিযুক্ত নরেন্দ্র মোদি দলের প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে লড়াই করতে চান। আর শনিবার তাকে নির্বাচনী প্রচারণা কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার বিষয়টি তার আশা পূরণের জন্য ইঙ্গিত হিসেবে দেখা হচ্ছে। মোদিকে দল থেকে প্রধানমন্ত্রী পদে মনোনয়ন দেওয়ার বিরোধিতাকারীদের একজন আদভানি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, জুন ১০, ২০১৩
সম্পাদনা: শরিফুল ইসলাম, নিউজরুম এডিটর, eic@banglanews24.com