নিউইয়র্ক: আইভরি কোস্টের পরিস্থিতি ক্রমেই অশান্ত হয়ে উঠছে এবং দেশটিতে আবারও গৃহযুদ্ধ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি-মুন। মঙ্গলবার মহাসচিব তার আশঙ্কার কথা জানান।
নিউইয়র্ক থেকে মুন বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ ধরে জাতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর জনগণকে বিশেষত প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত ওয়াতারার সমর্থকদের ভয় ভীতি প্রদর্শনের মাত্রা আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে গেছে। এ বাহিনীর সদস্যরা বাগবোর অনুগত। ’
‘এখানে কৌশলে অপহরণ, হত্যা এবং রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে। দেশটির এখন আবারও গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতিতে ফিরে যাওয়ার সমূহ সম্ভবনা আছে। ’
উল্লেখ্য, গত মাসে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পর থেকে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। বিরোধী দলের পদপ্রার্থী অ্যালাস্যানে ওয়াতারাকে নির্বাচিত ঘোষণা করে দেশটির স্বাধীন নির্বাচন কমিশন। কিন্তু আইভরি কোস্টের সাংবিধানিক পরিষদ এ ফলাফল বাতিল করে ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট লুরেন্ট বাগবোকে নির্বাচিত ঘোষণা করেন।
এদিকে জাতিসংঘ, আফ্রিকান ইউনিয়ন এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো ওয়াতারাকে জয়ী হিসেবে মেনে নিলেও বাগবো তা বাতিল করে দেন।
অবজ্ঞাপূর্ণ বক্তব্যে নিজেকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ঘোষণা করাসহ আইনসঙ্গতভাবে জয়ী হয়েছেন বলে দাবি করেন বাগবো। একইসঙ্গে ভবিষ্যৎ কোনো সহিংস ঘটনা এড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ফলাফল পর্যালোচনার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, ‘আমি আর কোনো রক্তপাত এবং যুদ্ধ চাইনা। ’
এদিকে নিউইয়র্কে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাগবোর বিষয়টি উল্লেখ করেন জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী প্রধান অ্যালাইন লে রয়। তিনি বলেন, ‘তিনি আর কোনো রক্তপাত, আর কোনো যুদ্ধ চান না বলে খুব পরিষ্কারভাবে জানিয়ে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে তার অনুগত বাহিনীকে অবশ্যই এবং এখনই সহিংসতায় উসকানি দেওয়া, মানবাধিকারের অপব্যবহার করা এবং ইউএনওসিআই অভিযানের সদস্যদের খেপানো বন্ধ করা উচিত। আমাদের একটি নির্দেশনা আছে যা আমাদের সম্পন্ন করতে হবে এবং আমরা অবশ্যই তা সম্পন্ন করবো। ’
বাগবো বিতাড়িত করে দিলেও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ আইভরি কোস্টে তাদের শান্তিরক্ষী অভিযানের সময়সীমা বাড়িয়ে ৩০ জুন পর্যন্ত নির্ধারণ করেছে। তবে জাতিসংঘ ওয়াতারার সমর্থিত সাবেক বিদ্রোহীদের সামরিক ও অন্যান্য সুবিধা দিচ্ছে বলেও অভিযোগ করে বাগবো সরকার। কিন্তু এ অভিযোগ অস্বীকার করেন বান কি- মুন।
তিনি বলেন, ‘জাতিসংঘ আফ্রিকা এবং আইভরি কোস্টের জনগণের পক্ষে আছে এবং গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে পাল্টে ফেলার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে। এক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অবশ্যই কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে হবে। ’
বাংলাদেশ স্থানীয় সময়: ১৩১০ ঘন্টা, ডিসেম্বর ২২, ২০১০