ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

অস্ট্রেলিয়ার বন্যার পানি সরছে

পলি, কাদা, নেতিয়ে পড়া গাছের দৃশ্য

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০১১
পলি, কাদা, নেতিয়ে পড়া গাছের দৃশ্য

রকহ্যাম্পটন: চারদিকের গাছ-ঘাস নেতিয়ে পড়েছে, পলি আর কাদায় সবুজের দেখা পাওয়াই ভার। বিস্তীর্ণ এলাকায় বন্যার পানি এখনো রয়ে গেছে।

পানি কিছু সরে যেতে নিজ এলাকায় ফেরার পথে এমনই বর্ণনা দিলেন কুইন্সল্যান্ডের এক বাসিন্দা।

পশ্চিম ব্রিসবেনের কন্ডামাইনে তিন ফুট উঁচু বন্যার পানির মধ্যে তার হোটেলের অবস্থা দেখতে আসেন হোটেলের মালিক শেইন হাইকি । অবস্থা দেখে হতবুদ্ধি হাইকি বলেন, ‘এটা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। ’

বন্যার কারণে বৃহস্পতিবার অন্যান্য বাসিন্দাদের সঙ্গে শহর ছাড়তে বাধ্য হওয়া হাইকি আরও বলেন, ‘কন্ডামাইন বেল হোটেলের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে এখানে কোনো ঝড় আঘাত করেছিলো। সব ঘাস কাঁদা হয়ে আছে, সব গাছ ভেঙ্গে পড়েছে। হোটেলে থাকা ফ্রিজ, ওয়াশিং মেশিনসহ সব কিছু নষ্ট হয়ে গেছে। ’

‘অবস্থা এখন এমন যে সব কিছু গুড়িয়ে দিয়ে আবার নতুন করে শুরু করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। ’  

অস্ট্রেলিয়ার বন্যা কবলিত কয়েকটি অঞ্চলের পানি সরে যেতে শুরু করায় ধীরে ধীরে বাড়ি ফিরছেন বাসিন্দারা। কিন্ত বিধ্বস্ত বাড়িঘর এবং শহরের দুর্দশা তাদের শোক আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।

থিয়োডরের মতো কিছু শহরে ফিরে আসা বাসিন্দারা শহর ও তাদের বাড়ির অবস্থায় শোকাহত বলে জানান কুইন্সল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী অ্যানা ব্লিহ। নাইন নেটওয়ার্ককে তিনি বলেন, ‘তারা অনেক যন্ত্রণা, অনেক দুর্ভোগ নিয়ে বাড়ি ফিরে আসছেন। আর প্রথম দর্শনেই তারা চিন্তা করছেন তারা পেছনে কি ফেলে এসেছিলেন, আর এখন তাদের বাড়ির অবস্থা কি। ’

‘এটা খুবই কষ্টদায়ক একটি প্রক্রিয়া হবে বলেই আমি মনে করছি। ’

সপ্তাহজুড়ে কুইন্সল্যান্ডে মুষলধারে বর্ষণের কারণে এ পর্যন্ত ওই এলাকার তিন শতাধিক বাড়ি প্লাবিত হয়েছে। একইসঙ্গে ভারী বর্ষণের কারণে ফসল ও খনি শিল্পের ব্যাপক ক্ষতি হওয়াসহ হাজার হাজার মানুষ তাদের বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হন।

তবে বন্যা দুর্গত রকহ্যাম্পটন অঞ্চলের পানি ধীরে ধীরে সরতে শুরু করায় সেখানে উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য অঞ্চলের বাসিন্দারাও ধীরে ধীরে তাদের বাড়িতে ফিরতে শুরু করেছেন।

রকহ্যাম্পটনের অভ্যন্তরের ইমারল্যান্ডের ৮০ শতাংশ বন্যায় প্লাবিত হলেও বাসিন্দাদের সহায়তায় সেখানে পরিষ্কার কাজ শুরু হয়েছে। তবে বন্যার পানি ধীরে ধীরে কমতে শুরু করলেও সপ্তাহান্তে আবারও ভারী বর্ষণের আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই আরও এক সপ্তাহের মধ্যে বাসিন্দারা বসবাসের জন্য বাড়ি ফিরতে পারবেনা বলে সতর্ক করা হয়েছে।

রকহ্যাম্পটনের মেয়র ব্র্যাড কার্টার শুক্রবার সেভেন নেটওয়ার্ককে বলেন, ‘পানি সরে যাওয়ার খুব বেশি লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। তাই অনেক বাসিন্দার পক্ষেই বাড়ি ফিরে যেতে আরও অনেক সময় লাগতে পারে। ’

বন্যার মোট ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ সম্পর্কে কখনও কোনো ধারণা পাওয়া না গেলেও এর মোট পরিমাণ ১৫০ কোটি ডলার হতে পারে বলে কুইন্সল্যান্ড সরকারের তরফ থেকে জানানো হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।