ঢাকা: কমিউনিজমের অবসানের পর পোলান্ডের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাডেউসজ মাজোউয়েককি আর নেই। সোমবার সকালে হাসপাতালে তিনি মারা যান বলে জানিয়েছেন তার একান্ত সচিব।
মারা যাওয়ার সময় তাডেউসজ মাজোউয়েককির বয়স হয়েছিল ৮৬ বছর।
কমিউনিস্ট নেতা ও বিরোধীদের মধ্যে ‘গোলটেবিল বৈঠকের’ এ স্থপতিকে বুধবার প্রচণ্ড জ্বরের কারণে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় বলে জানান তার একান্ত সচিব। ওই গোলটেবিল বৈঠকের মাধ্যমে ১৯৮৯ সালের নির্বাচনের পথ প্রশস্ত হয়েছিল। এ নির্বাচনে জয় পেয়ে প্রধানমন্ত্রী হন তাদেউসজ।
নির্বাচনে তার সলিডারিটি পার্টির জয়ের মাধ্যমে পূর্ব ইউরোপজুড়ে কমিউনিস্ট সরকারের পতন শুরু হয়।
১৯৯০ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তাডেউসজ। ইউরোপীয় ইউনিয়নে পোলান্ডের অন্তর্ভুক্তির পক্ষে ভূমিকা পালনকারীদের মধ্যে তিনি ছিলেন অন্যতম।
তাদেউসজের মৃত্যুতে শোকাহত পোলান্ডবাসী। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী রাডোস্ল সিকোরস্কি তাডেউসজকে পোলান্ডের মুক্তি ও স্বাধীনতার জনকদের একজন হিসেবে অভিহিত করেন।
পোল্যান্ডের এক সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম নেওয়া তাডেউস ওয়ারশ বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনে পড়াশোনা করেন। বিরোধী পক্ষের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে ১৯৫৫ সালে তাকে কমিউনিস্ট পরিচালিত সংগঠন ক্যাথলিক পিএএক্স থেকে বহিষ্কার করা হয়। ১৯৫৭ সালে ক্যাথলিক ইনটেলিজেন্টসিয়া ক্লাব প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করেন তিনি।
১৯৮১ সালে বিরোধী সলিডারিটি সাপ্তাহিক সাময়িকীর প্রথম সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নেন। কিন্তু কমিউনিস্ট শাসকরা সামরিক আইন জারি করে একই বছরের ডিসেম্বরে তা সাময়িকীটি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। ওই সময় বিরোধী অনেক কর্মীকে গ্রেফতার ও হত্যা করে কমিউনিস্ট শাসকরা।
সরকারের অত্যাচারে-নিপীড়নে সরকারবিরোধী আন্দোলন ফুসে উঠলে রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা তৈরি হয়। এ সংকট মুক্তির উদ্যোগ নেন তাডেউসজ। তিনি ক্ষমতাসীন কমিনিস্ট ও বিরোধীদের মধ্যে আলোচনার উদ্যোগ নেন। ঐতিহাসিক ‘গোলটেবিল বৈঠকের’ ফলে ১৯৮৯ সালের জুনে পোলান্ডের প্রথম অবাধ নির্বাচন হয়। নির্বাচন তাডেউসজের সলিডারিটি পার্টি জয়ী হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৮, ২০১৩
এসএফআই/জেসিকে