আগরতলা (ত্রিপুরা): বাংলাদেশের হরতাল প্রভাব পড়েছে ত্রিপুরাতেও। সীমান্ত বাণিজ্য প্রায় বন্ধ।
গত রোববার থেকে প্রায় সম্পূর্ণ বন্ধ আখাউড়ার সীমান্ত বাণিজ্য। বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিয়ে গাড়ি আসছে খুব কম। সীমান্ত ব্যবসায়ীদের কথায় আগে এক দিনে যেরকম ব্যবসা হত এখন তার পাঁচ ভাগের একভাগ এসে দাঁড়িয়েছে।
সীমান্ত ব্যবসায়ী হাবুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, আগে আখাউড়া সীমান্তে প্রতি দিন প্রায় এক কোটি থেকে সোয়া কোটি ভারতীয় টাকার বাণিজ্য হত। এই সপ্তাহে তা কমে দাঁড়িয়েছে দৈনিক মাত্র ২৫ লক্ষ টাকায়।
তিনি জানান, এপারের ব্যবসায়ীরা উৎসাহ হারাচ্ছেন ব্যবসা থেকে। ত্রিপুরা থেকেও নামমাত্র গাড়ি ঢুকছে বাংলাদেশে।
ত্রিপুরা এবং বাংলাদেশের মধ্যে প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র আখাউড়া। তাছাড়া আরও সাতটি ল্যান্ড কাস্টমস স্টেশন রয়েছে। হাবুল বিশ্বাস জানিয়েছেন, প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্রের যদি এই অবস্থা হয় তবে অন্যগুলির অবস্থা সহজেই অনুমেয়।
ব্যবসায়ীদের অবস্থা যাই থাকুক না কেন, আরও সঙ্গীণ শ্রমিকদের অবস্থা। এখানে দৈনিক হাজিরা খেটে এক জন শ্রমিক দিনে ৩০০/৪০০ টাকা রোজগার করতেন। এখন দিনে ৬০ টাকা রোজগার করতেই কষ্ট হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তারা।
কারণ শ্রমিকরা টাকা পান লড়িতে মাল উঠানামা করিয়ে। পণ্য নিয়ে লড়িই আসছে না বাংলাদেশ থেকে। ফলে শ্রমিকরা মাল তুলবেন আর নামাবেন কিভাবে।
আখাউড়া সীমান্তে যারা ব্যবসা করেন তাদের অনেকের মত এমন অবস্থা অগে কখনও হয়নি। ১৯৯৬ সাল থেকে আখাউড়া দিয়ে সীমান্ত বাণিজ্য শুরু হয়েছে। সে বছর ব্যবসা হয়েছিল চার লক্ষ টাকার। কিন্তু এরপর থেকেই প্রতি বছর লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে সীমান্ত বাণিজ্যের বহর। একবারের জন্যও সে ব্যবসা নিম্নমুখী হয়নি।
ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন পণ্য সামগ্রী নিয়ে এগিয়ে এসেছেন বাণিজ্যের জন্য। কিন্তু এবারই উল্টো চিত্র। বছরের মাঝামাঝি ভারতীয় টাকার দাম পড়ে যাওয়াতে ব্যবসায়ীরা লোকসানের মুখোমুখি হয়েছিলেন। তখন বেশ কিছু দিন প্রায় বন্ধ ছিল সীমান্ত বাণিজ্য।
এখন আবার বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সীমান্ত বাণিজ্য। সীমান্ত ব্যবসায়ীরা উৎসাহ হারাচ্ছেন। সীমান্ত বাণিজ্যের গ্রাফ নামছে নিচের দিকে।
কবে নাগাদ অবস্থা স্বাভাবিক হবে তা কেউ বলতে পারছেন না। তবে সবাই তাকিয়ে ভবিষ্যতের দিকে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৩ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৩,
এসএস/এমজেডআর