ঢাকা: উত্তর আমেরিকায় ভূত নেমেছে! ভূত-প্রেত হানা দিয়েছে খোদ মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার বাসভবন থেকে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকোসহ উত্তর আমেরিকার প্রায় সবগুলো বাড়িতে! আর এই ভূতদের খুশি মনে বাড়ির দরজা থেকে ফিরিয়ে দিতে কমলা ও কালো রঙের পোশাক পরে অপেক্ষা করছেন ওবামা ও ফার্স্টলেডি মিশেল! ওবামা-মিশেলদের মতো উত্তর আমেরিকার প্রতিটি বাড়ির প্রায় সব গৃহকর্তা-গৃহকর্ত্রীকেই এখন ভূতকে খুশি করে ফিরিয়ে দিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে! ভূত-মানুষের এসব অদ্ভুত কাণ্ড চলবে রাতভর (স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত পর্যন্ত)।
না সত্যি সত্যি ভৌতিক কাণ্ড নয়! শতো বছর ধরে উদযাপিত উত্তর আমেরিকার জনপ্রিয় ‘হ্যালোইন উৎসব’র কথাই বলা হচ্ছে।
মার্কিন সংবাদ মাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের চারপাশে শক্ত জাল পেতে দৈত্যকার মাকড়সা সাজিয়ে দেওয়া হয়েছে! সঙ্গে রাখা হয়েছে কুমড়ো দিয়ে তৈরি বৈচিত্র্য ধরনের ভূত-প্রেতের প্রতিকৃতি! হা করে থাকা কুমড়ো ভূতের মুখ, নাক, চোখ ঠিকরে বেরোচ্ছে আলোকরশ্মি! আলোকরশ্মির হঠাৎ হঠাৎ রোমহর্ষক চমকানি দেখে আঁতকে উঠতে হচ্ছে খোদ বাড়িওয়ালাকেই!
অন্যদিকে, হ্যালোইন উৎসব উপলক্ষে পাড়া-প্রতিবেশির শিশুদের ‘ট্রিক (কৌতুক) হয়রানি’ থেকে বাঁচতে ‘ট্রিট (উপহার)’ নিয়ে অপেক্ষা করছেন প্রেসিডেন্ট ওবামা ও ফার্স্টলেডি মিশেল! ভূতের রাত উদযাপনে কমলা ও কালো রঙা বিচিত্র পোশাক পোশাক পরেছেন বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর দম্পতি!
হ্যালোইন উৎসবের ইতিহাস ঘাঁটলে জানা যায়, রোমান সভ্যতায় নতুন ফসল ঘরে তোলার উৎসব হিসেবে পালিত হতো ‘সাহেইন’। এই উৎসব এক সময় ইউরোপের অন্যান্য অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়ে।
তবে মজার ব্যাপার হলো এই উৎসবের একবারে মূল ধারণাই পরিবর্তন হয়ে সেটা ভূত উৎসবে রূপ নেয়! পাল্টে যায় উৎসবের নাম পর্যন্তও!
ব্রিটিশদের ধারণা, বছরের শেষ রাতে জগতের সব কার্যক্রম স্থগিত হয়ে যায়! মৃত্যুর দেবতা নরকের সকল মৃত আত্মাকে জীবিত পৃথিবীতে আসার অনুমতি দেন! সেই প্রেত-আত্মারা পৃথিবীতে এসে নতুন দেহের সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়!
তাদের হাত থেকে বাঁচতেই ভূত বা হ্যালোইন উৎসব করতে থাকে ইউরোপীয়রা। এই উৎসব এখন আর কেবল ইউরোপে সীমাবদ্ধ নেই, উত্তর আমেরিকা হয়ে প্রশান্ত মহাসাগরের নিউজিল্যান্ড বা দূরপ্রাচ্যের জাপানেও ছড়িয়ে পড়েছে।
তবে এই উৎসবে সবচেয়ে বেশি আনন্দ-উদ্দীপনা দেখা যায় শিশুদের মধ্যে। ভুতুড়ে পোশাক পরিধান ও প্রসাধনী ব্যবহার করে তারা প্রতিবেশি বা আত্মীয়দের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ‘ট্রিক অর ট্রিট’ বলে গৃহকর্তা-কর্ত্রীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন! তখন শিশুদের কৌতুক থেকে বাঁচতে তাদের ট্রিট বা চকলেট দিয়েই বিদায় করতে হয়!
বাংলাদেশ সময়: ১৭৫১ ঘণ্টা, নভেম্বর ০১, ২০১৩
এইচএ/জেসিকে