ঢাকা: বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সরকারের ওপর গুপ্তচরবৃত্তির জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাল্লা দিন দিন ভারী হচ্ছে। অভিযোগকারীর তালিকায় সর্বশেষ যোগ হয়েছে ইন্দোনেশিয়া।
এশিয়াতে নজরদারির জন্য যুক্তরাষ্ট্র অস্ট্রেলিয়ান দূতাবাসগুলোকে ব্যবহার করতো- জার্মান এক সংবাদপত্রে এই খবর প্রকাশিত হওয়ার পর জাকার্তায় অস্ট্রেলীয় রাষ্ট্রদূতকে ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়।
এশিয়ায় আমেরিকান নেতৃত্বাধীন গোয়েন্দা কার্যকলাপের খবর প্রথম প্রকাশিত হয় জার্মানির পত্রিকা ‘দ্যর স্পিগেল’-এ, যে খবরের ভিত্তি ছিল আমেরিকান জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার ফাঁস হওয়া নথিপত্র।
আমেরিকার সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তা এডওয়ার্ড স্নোডেনের ফাঁস করা আমেরিকান জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার এই নথিতে একটি গোয়েন্দা কর্মসূচির বর্ণনা দেওয়া হয়েছে যার নাম স্টেটরুম।
এতে আমেরিকা, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া ও ক্যানাডার দূতাবাসগুলোতে বেতার, টেলিফোন ও ইন্টারনেটসহ অন্যান্য যোগাযোগমাধ্যমে কথোপকথন ও তথ্যের আদানপ্রদানে আড়ি পাতার জন্য যন্ত্র ও সরঞ্জাম রাখা হতো।
সিডনির এক সংবাদপত্রে বলা হয়েছে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে অস্ট্রেলিয়ার দূতাবাসগুলোকে গোয়েন্দা তৎপরতার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে চীন, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনাম।
ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্টি নাটালিগাওয়া বিষয়টি নিয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বলেছেন, ‘বিষয়টি সত্যি হলে এতে যে শুধু নিরাপত্তা লঙ্ঘন করা হয়েছে তাই নয়, এটা কূটনৈতিক শিষ্টাচারেরও ব্যাপক লংঘন। ’
অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপ বলেছেন ইন্দোনেশিয়ার পররাষ্টমন্ত্রী তাঁর উদ্বেগের কথা তাঁকে জানিয়েছেন। তবে গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড নিয়ে অস্ট্রেলীয় সরকার যেহেতু কোনো মন্তব্য করে না, তাই এ বিষয়ে তিনি সরাসরি কিছু মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
তবে ওই অঞ্চলে ইন্দোনেশিয়া যে অস্ট্রেলিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র দেশ তা জুলি বিশপ উল্লেখ করেছেন। অন্যদিকে, অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী টোনি অ্যাবট বলেছেন অস্ট্রেলিয়ার সব সরকারি সংস্থা ও কর্মকর্তারা আইনের মধ্যে থেকেই কাজ করছেন।
ইতিমধ্যে চীনও এই রিপোর্ট সম্পর্কে ব্যাখ্যা দাবি করেছে।
এদিকে লন্ডনে এক সম্মেলনে ভিডিও লিংকের মাধ্যমে যোগ দিয়ে আমেরিকান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি বলেছেন, আমেরিকান জাতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ‘যথাযথ আচরণ’ না করার বিষয়টি মোকাবেলায় তিনি প্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে একসঙ্গে কাজ করবেন।
তবে তিনি একথা স্বীকার করেছেন যে আমেরিকার গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড কোনো কোনো ক্ষেত্রে সীমা ছাড়িয়ে গেছে।
সূত্র: বিবিসি
বাংলাদেশ সময়: ০৫৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৩
ইএস/এমজেএফ/আরকে