ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ২৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

ভিসা বন্ড থেকে পিছু হটলো যুক্তরাজ্য

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২২ ঘণ্টা, নভেম্বর ৪, ২০১৩
ভিসা বন্ড থেকে পিছু হটলো যুক্তরাজ্য

ঢাকা: বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাসহ বিশ্বের ৬টি দেশের নাগরিকদের ‘সর্বোচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ’ চিহ্নিত করে ভ্রমণের আগেই জামানত রাখার (ভিসা বন্ড) পরিকল্পনা থেকে পিছু হটেছে যুক্তরাজ্য সরকার।

উপমহাদেশসহ বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে- এমন যুক্তি সামনে এনে দেশটির পার্লামেন্টের সদস্যদের তীব্র সমালোচনার মুখে এই সিদ্ধান্ত নিলো ডেভিড ক্যামেরনের নেতৃত্বাধীন কনজারভেটিভ পার্টির জোট সরকার।



রোববার দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভ্রমণের আগেই চিহ্নিত দেশগুলোর নাগরিকদের কাছ থেকে জামানত বাবদ ৩ হাজার পাউন্ড (প্রায় ৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা) রাখার পরিকল্পনা বাতিল করেছে সরকার।

চলতি নভেম্বর থেকেই পরীক্ষামূলকভাবে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ঘানা ও নাইজেরিয়ার নাগরিকদের কাছ থেকে ৬ মাসের ভ্রমণ ভিসা বেধে দিয়ে এই জামানত গ্রহণের প্রস্তুতি নিচ্ছিল ব্রিটিশ সরকার। বন্ডের নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাস মেয়াদের বেশি যদি কেউ যুক্তরাজ্যে অবস্থান করতো তাহলে জামানত বাবদ জমা দেওয়া অর্থগুলো বাজেয়াপ্ত হতো।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, অবৈধ অভিবাসন বা নির্ধারিত মেয়াদের চেয়ে যুক্তরাজ্যে বেশিদিন অবস্থান কমিয়ে আনতেই এই জরিমানা আরোপের চিন্তা ভাবনা করেছিল সরকার। কিন্তু এখন এ ব্যাপারে আমরা আর এগোচ্ছি না।

তবে কী কারণে এই পরিকল্পনা থেকে পিছু হটলো ক্যামেরন সরকার সে বিষয়টি স্পষ্ট করেননি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওই মুখপাত্র।

ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে, নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৫ সালের মধ্যে অবৈধ অভিবাসীর সংখ্যা এক লাখের নিচে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে এ পরিকল্পনা নেয় কনজারভেটিভ নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। কিন্তু  জোট সরকারের অংশীদার লিবারেল ডেমোক্রেটস পার্টির পার্লামেন্ট সদস্য ও উপপ্রধানমন্ত্রী নিক ক্লেগের বিরোধিতার কারণেই এই পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হলো ক্যামেরন সরকার।

গত জুনেই নিক ক্লেগ ও তার দলের পার্লামেন্ট সদস্যরা বলেছিলেন, সরকারের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে উপমহাদেশসহ বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের সম্পর্কের অবনতি হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হবে।

অভিবাসন কমানোর লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের কথা বলা হলেও বাংলাদেশসহ চিহ্নিত দেশগুলোর পক্ষ থেকে বলা হয়, এ ধরনের সিদ্ধান্ত নাগরিকদের হয়রানিই বাড়াবে।

যুক্তরাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, চিহ্নিত দেশগুলোর নাগরিকরা ভিসার মেয়াদের চেয়েও বেশিদিন যুক্তরাজ্যে অবস্থান করে ভিসার ‘অপব্যবহার’ করেন বলে এই পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে সরকার। পরীক্ষামূলকভাবে চালুর পর সফলতা পেলে ধীরে ধীরে এই সিদ্ধান্ত পূর্ণ কার্যকর করা হবে বলেও জানানো হয়।

উল্লেখ্য, এর আগে লেবার পার্টির নেতৃত্বাধীন সরকারও ভিসা বন্ড চালুর পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। কিন্তু পার্লামেন্ট সদস্যদের জোরালো বিরোধিতার মুখে সে সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটে তৎকালীন সরকারও।

বাংলাদেশ সময়: ১৩২০ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৪, ২০১৩
এইচএ/এমএমকে/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।