ঢাকা: শক্তিশালী টাইফুন হাইয়ানের আঘাতে ফিলিপাইনে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে বলে কর্তৃপক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। পাঁচ নম্বর ক্যাটাগরির টাইফুনটি স্থানীয় সময় শুক্রবার ভোর ৫টায় (গ্রিনিচমান সময় বৃহস্পতিবার ২১টায়) ২৭৫ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানে।
হাইয়ান সর্বপ্রথম আঘাত হানে ফিলিপাইনের পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ সামারে।
এদিকে টাইফুনের আঘাতে তাকলোবান শহরের রাস্তায় মৃতদেহ পড়ে থাকার কথা জানিয়েছেন দেশটির বেসামরিক বিমান পরিচালনা কর্তৃপক্ষের সহকারী পরিচালক ক্যাপ্টেন জন অ্যান্ড্রুস।
প্রচন্ড বেগে আঘাত হানা টাইফুনটি বহু ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত করেছে, ঘটেছে ভূমিধস। বিদ্যুত ও যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় দেয় কোটি মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। চলতি সপ্তাহের যে কোনো সময় টাইফুনটি ভিয়েতনামে আঘাত হানতে পারে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়েদার আন্ডারগ্রাউন্ডের পরিচালক ও হারিকেন বিশেষজ্ঞ জেফ মাস্টার্স বলেছেন, সম্ভবত ঘণ্টায় ১৯৫ মাইল বেগে সুপার টাইফুন আঘাত হেনেছে। আঘাত হানা শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় হিসেবে রেকর্ড করেছে এটি।
ফিলিপাইনের জাতীয় আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দেশের ইস্টার্ন সামার প্রদেশের গুইয়ানের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে ৬২ কিলোমিটার দূরে উৎপত্তি হয় ঝড়টির।
যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনীর যৌথ টাইফুন সতর্কতা কেন্দ্র হাইয়ান আঘাত হানার কিছুক্ষণ আগে জানিয়েছিল, ঘণ্টায় ৩১৪ কিলোমিটার গতিতে ঝড়ো যাওয়া বয়ে যাওয়ার সঙ্গে ৩৭৯ কিলোমিটার বেগে আঘাত হানতে পারে।
ঝড় মোকাবেলায় আঘাত হানার আগে যুদ্ধের প্রস্তুতির মতো প্রস্তুতি নেওয়ার ঘোষণা দেন ফিলিপাইনের প্রেসিডেন্ট বেনিগনো অ্যাকুইনো।
টেলিভিশনে এক ভাষণে তিনি বলেন, ‘আমরা যদি একতাবদ্ধ থাকি তাহলে কোনো টাইফুনই ফিলিপিনোদের ছুরি নিয়ে যেতে পারবে না। ’
উদ্ধার তৎপরতার জন্য প্রস্তুতি রাখা হয় বিমানবাহিনীর তিনটি বিমান, ৩২টি হেলিকপ্টার এবং ২০টি জাহাজ।
এর আগে ২০১১ সালে ভয়াবহ এক ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানে। গত মাসে আঘাত হানা ভূমিকম্পটির মাত্রা ছিল ৭.১। চলতি বছর ২৪তম টাইফুন হিসেবে দেশটিতে আঘাত হানল হাইয়ান।
প্রতিবছর ফিলিপাইনে গড়ে ২০টি করে টাইফুন আঘাত হানে। ২০১১ সালে টাইফুন ওয়াশির আঘাতে কমপক্ষে ১ হাজার ২শ জন নিহত এবং ৩ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হয়। ঝড়ে ১০ হাজারের বেশি ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়ে যায়। আর গত মাসের ভূমিকম্পে ২ শতাধিক লোক মারা যায়।
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৯, ২০১৩
জেডএস/বিএসকে