ঢাকা: নতুন মামলায় মিশরের ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে আদালতের কাঠ গড়ায় দাঁড় করানো হয়েছে। রোববার তাকে বুর্জ আল-আরব কারাগার থেকে বিমানে করে কায়রোর সামরিক একাডেমির একটি আদালতে নেওয়া হয়।
শুনানির সময় তাকে শব্দনিরোধক একটি কাঁচে ঘেরা কক্ষে রাখা হয়। মুরসিকে শব্দনিরোধক ঘরে রাখার প্রতিবাদে রোববার তার আইনজীবীরা আদালত বয়কট করেন। পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বিচার কাজ মুলতবি ঘোষণা করেন আদালত।
গুপ্তচরবৃত্তি ও সন্ত্রাসী হামলা চালানোর ষড়যন্ত্রের এ মামলায় মুরসি ছাড়াও ৩৫ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মিশরের রাষ্ট্রপক্ষের দাবি, মিশরে সন্ত্রাসী হামলা চালানোর জন্য মুরসি ও তার দল মুসলিম ব্রাদারহুডের নেতারা লেবাননের হিজবুল্লাহ ও ফিলিস্তিনের হামাস গ্রুপের সঙ্গে চক্রান্ত করেছিল।
মুরসির বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। মিশরের সেনা সমর্থিত সরকার এ মামলা ছাড়াও মুরসির বিরুদ্ধে আরও ৩টি মামলা করেছে।
ক্ষমতা গ্রহণের এক বছরের মাথায় গত জুলাই মাসে মুরসিবিরোধী ব্যাপক বিক্ষোভের পর সেনাবাহিনী তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে।
তারপর থেকে মুরসির মুসলিম ব্রাদারহুডসহ সেনা সমর্থিত সরকার বিরোধী বিভিন্ন নেতাকর্মীদের গ্রেফতার ও তাদের ওপর দমনপীড়ন চালানো হয়।
মুসলিম ব্রাদারহুডকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। পাশাপাশি নিষিদ্ধ করা হয় তাদের সমর্থনে যেকোনো জনসমাবেশও।
মুরসি ছাড়াও মুসলিম ব্রাদারহুডের শীর্ষ নেতা মোহাম্মদ বদি ও তার ডেপুটি প্রেসিডেন্ট প্রার্থী খায়রাত-আল শাতিরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডসহ বিভিন্ন অভিযোগে মামলায় জড়ানো হয়েছে।
মুরসি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নিরাপত্তাবাহিনীর সঙ্গে তার সমর্থকদের সংঘর্ষে অন্তত এক হাজার জন নিহত হয়েছেন। কয়েক হাজার মুরসিক সমর্থককে আটক করা হয়।
২০১২ সালে ক্ষমতায় থাকাকালে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের বাইরে নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে মুরসিবিরোধীদের হতাহতের ঘটনায় গত নভেম্বরে তার বিরুদ্ধে প্রথম মামলার বিচার শুরু হয়।
দ্বিতীয় বিচারটি শুরু হয় জানুয়ারিতে। এতে অভিযোগ আনা হয়, ২০১১ সালে যখন হোসনি মোবারকের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ হয়েছিল, তখন কয়েকজন কারারক্ষীকে হত্যা করে কারাগার ভেঙে পালিয়ে যান মুরসিসহ অনেকে।
বিচার বিভাগকে অপমানের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে চতুর্থ আরেকটি মামলার বিচার শিগগিরই শুরু হবে।
তবে মুরসির সমর্থকদের অভিযোগ, প্রেসিডেন্ট মুরসিসহ তার দল ও তারা রাজনৈতিকভাবে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলার শিকার।
আগের মামলায় মুরসি আদালতে দাঁড়িয়ে জ্বালাময়ী বক্তব্য দেন। তিনি আদালতের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। পাশাপাশি তিনি নিজেকে এখনো মিশরের বৈধ প্রেসিডেন্ট হিসেবে দাবি করেন।
তিনি উচ্চস্বরে বলেন, ‘আমি এই প্রজাতন্ত্রের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট। কেন কয়েক সপ্তাহ ধরে আমাকে এখানে আটকে রাখা হয়েছে?’
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘণ্টা/আপডেটেড: ২২০৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৪